কলিম শরাফী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
DeloarAkram (আলোচনা | অবদান) অ হটক্যাটের মাধ্যমে বিষয়শ্রেণী:সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার প্রাক্তন শিক্ষার্থী যোগ |
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান) |
||
(৮ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ১৬টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
৩ নং লাইন: | ৩ নং লাইন: | ||
|alternate name= |
|alternate name= |
||
|lived=[[মে ৮]], ১৯২৪ – [[নভেম্বর ২]], ২০১০ |
|lived=[[মে ৮]], ১৯২৪ – [[নভেম্বর ২]], ২০১০ |
||
|image=[[ |
|image=[[চিত্র:কলিম শরাফী.jpg]] |
||
|dateofbirth=৮ মে ১৯২৪ |
|dateofbirth=৮ মে ১৯২৪ |
||
|placeofbirth= |
|placeofbirth= খয়রাডিহি, [[বীরভূম জেলা|বীরভূম]], [[বাংলা প্রেসিডেন্সি]] ([[পশ্চিমবঙ্গ]], [[ভারত]]) |
||
|dateofdeath={{মৃত্যু তারিখ ও বয়স|2010|11|02|1924|5|8}} |
|dateofdeath={{মৃত্যু তারিখ ও বয়স|2010|11|02|1924|5|8}} |
||
|placeofdeath= [[ঢাকা]], ([[বাংলাদেশ]]) |
|placeofdeath= [[ঢাকা]], ([[বাংলাদেশ]]) |
||
১৩ নং লাইন: | ১৩ নং লাইন: | ||
}} |
}} |
||
'''কলিম শরাফী''' (৮ মে ১৯২৪ - ২ নভেম্বর ২০১০) হলেন [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একজন স্বনামধন্য [[রবীন্দ্র সঙ্গীত]] শিল্পী, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। |
'''কলিম শরাফী''' (৮ মে ১৯২৪ - ২ নভেম্বর ২০১০) হলেন [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একজন স্বনামধন্য [[রবীন্দ্র সঙ্গীত]] শিল্পী, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার পূর্ণ নাম '''মাখদুমজাদা শাহ সৈয়দ কলিম আহমেদ শরাফী'''। দেশাত্মবোধক গানের ক্ষেত্রেও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এর বাইরে তিনি ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন।{{তথ্যসূত্র প্রয়োজন}} |
||
== প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা == |
== প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা == |
||
কলিম শরাফী [[ভারত|ভারতের]] [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গের]] [[বীরভূম জেলা|বীরভূম জেলার]] [[সিউড়ি সদর মহকুমা|সিউড়ি সদর মহকুমার]] অন্তর্গত খয়রাদিহি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন৷ কলিম শরাফীর পিতার নাম সামি আহমেদ শরাফী ও মাতার নাম আলিয়া বেগম। মাত্র চার বছর বয়সে মা আলিয়া বেগমকে হারান তিনি। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া কলিম শরাফীর আরও দুই বোন রয়েছে। |
কলিম শরাফী [[ভারত|ভারতের]] [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গের]] [[বীরভূম জেলা|বীরভূম জেলার]] [[সিউড়ি সদর মহকুমা|সিউড়ি সদর মহকুমার]] অন্তর্গত খয়রাদিহি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন৷ কলিম শরাফীর পিতার নাম সামি আহমেদ শরাফী ও মাতার নাম আলিয়া বেগম। মাত্র চার বছর বয়সে মা আলিয়া বেগমকে হারান তিনি। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া কলিম শরাফীর আরও দুই বোন রয়েছে। তার পূর্বপুরুষ সোনারগাঁ থেকে এসেছিলেন বীরভূমে।<ref name="সংসদ">অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ৮৩, {{আইএসবিএন|978-81-7955-292-6}}</ref> তার হাতেখড়ি হয় [[আরবি]] ওস্তাদ আর [[বাংলা ভাষা|বাংলা]] পণ্ডিত মশাইয়ের হাতে। এরপর ১৯২৯ সালে তিনি পাঠশালায় ভর্তি হয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তাঁতিপাড়া প্রাইমারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে চলে আসেন [[কলকাতা]]য় বাবা সামি আহমেদ শরাফীর কাছে। এখানে ছাত্রবয়সে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন। আঠারো বৎসর বয়সে ধরা পড়ে বছর দুই জেল খাটেন। কারাগারেই তিনি কমিউনিস্ট নেতাদের সংস্পর্শে আসেন।<ref name="সংসদ"/>পরে ১৯৩৫ সালে ভর্তি হন [[মাদ্রাসা-ই-আলিয়া]]তে। ইঙ্গ-পারসীক বিভাগে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সে সময় সাংবাদিক [[শহীদুল্লাহ কায়সার]] তার সহপাঠী ছিলেন। তিনি ডাক্তারি পড়তে ভরতি হয়েছিলেন, কিন্তু পড়া শেষ করেন নি।<ref name="সংসদ"/> কলিম কলকাতার বিখ্যাত সঙ্গীত বিদ্যালয় '[[দক্ষিণী]]' থেকে ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন। [[রবীন্দ্র সংগীত]] শেখেন [[শুভ গুহঠাকুরতা| শুভ গুহঠাকুরতার]] কাছে।<ref name="সংসদ"/> |
||
কলিম কলকাতার বিখ্যাত সঙ্গীত বিদ্যালয় '[[দক্ষিণী]]' থেকে ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন। |
|||
==পূর্ববঙ্গে উদ্বসন== |
== পূর্ববঙ্গে উদ্বসন == |
||
শরাফী ১৯৫০ সালে [[ঢাকা|ঢাকায়]] বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৬৪-৬৭ সাল পর্যন্ত [[পাকিস্তান টেলিভিশন]]ে প্রোগ্রাম পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ১৯৬৯-৭২ সাল পর্যন্ত [[পাকিস্তান গ্রামোফোন কোম্পানি লিমিটেড]]ের পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৪-৭৬ সালে তিনি [[বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন]]ের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব পালন করেন। |
শরাফী ১৯৫০ সালে [[ঢাকা|ঢাকায়]] বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৬৪-৬৭ সাল পর্যন্ত [[পাকিস্তান টেলিভিশন]]ে প্রোগ্রাম পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ১৯৬৯-৭২ সাল পর্যন্ত [[পাকিস্তান গ্রামোফোন কোম্পানি লিমিটেড]]ের পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৪-৭৬ সালে তিনি [[বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন]]ের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব পালন করেন। |
||
==প্রাতিস্বিক জীবন== |
== প্রাতিস্বিক জীবন == |
||
কলিম শরাফী প্রথমবার পরিণয়ে আবদ্ধ হন ১৯৪৯ সালে। প্রথমস্ত্রীর সাথে ১৯৫৭ সালে বিচ্ছেদ ঘটার পর ১৯৬৩ সালে দ্বিতীয়বারের মতো দার পরিগ্রহ করেন। কলিম শরাফীর দ্বিতীয় স্ত্রী অধ্যাপিকা নওশেবা খাতুন [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]]ে [[মনোবিজ্ঞান]] বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। কলিম শরাফীর দুই সন্তানের নাম আলেয়া শরাফী এবং আজিজ শরাফী। |
কলিম শরাফী প্রথমবার পরিণয়ে আবদ্ধ হন ১৯৪৯ সালে। প্রথমস্ত্রীর সাথে ১৯৫৭ সালে বিচ্ছেদ ঘটার পর ১৯৬৩ সালে দ্বিতীয়বারের মতো দার পরিগ্রহ করেন। কলিম শরাফীর দ্বিতীয় স্ত্রী অধ্যাপিকা নওশেবা খাতুন [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]]ে [[মনোবিজ্ঞান]] বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। কলিম শরাফীর দুই সন্তানের নাম আলেয়া শরাফী এবং আজিজ শরাফী। |
||
== সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড == |
== সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড == |
||
রক্ষণশীল পরিবার থেকে উঠে আসলেও কলিম শরাফী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সবসময়ে নিয়োজিত রেখেছেন। ১৯৪৪ সালে তিনি [[ভারতীয় গণনাট্য সংঘ]]ে যোগ দিয়ে কলকাতার [[হাজরা পার্ক]]ে হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে সর্বপ্রথম [[গণসঙ্গীত]] পরিবেশন করেন। |
রক্ষণশীল পরিবার থেকে উঠে আসলেও কলিম শরাফী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সবসময়ে নিয়োজিত রেখেছেন। সংগীত, নাটক ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের আকর্ষণে তিনি প্রথমে ভাগনাস, পরে রহুরূপীর সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৪৪ সালে তিনি [[ভারতীয় গণনাট্য সংঘ]]ে যোগ দিয়ে কলকাতার [[হাজরা পার্ক]]ে হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে সর্বপ্রথম [[গণসঙ্গীত]] পরিবেশন করেন। |
||
এরপর ১৯৪৬ সালে বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানি [[এইচএমভি]] থেকে বের হয় কলিম শরাফীর প্রথম গণসঙ্গীতের রেকর্ড। প্রায় সাথে সাথেই নিয়মিত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন কলকাতা বেতারে। এরপর [[শুভ গুহঠাকুরতা]]র [[রবীন্দ্র সঙ্গীত]] শেখাবার প্রতিষ্ঠান 'দক্ষিণী'তে নিয়মিত রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন। এক সময় কলিম শরাফী দক্ষিণীতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষক হিসেবে। দক্ষিণীতে কলিম শরাফী সঙ্গীতগুরু [[দেবব্রত বিশ্বাস]], [[হেমন্ত মুখোপাধ্যায়]] ও [[সুচিত্রা মিত্র]]ের সাহচর্য পেয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে নীতিগত বিরোধের কারণে মহর্ষি [[মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য]], [[শম্ভু মিত্র]], [[তৃপ্তি মিত্র]], [[অশোক মজুমদার]], [[মোহাম্মদ ইসরাইল]], কলিম শরাফী প্রমুখ সংঘ থেকে বেরিয়ে এসে গঠন করেন নাট্যসংস্থা 'বহুরূপী'। |
এরপর ১৯৪৬ সালে বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানি [[এইচএমভি]] থেকে বের হয় কলিম শরাফীর প্রথম গণসঙ্গীতের রেকর্ড। প্রায় সাথে সাথেই নিয়মিত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন কলকাতা বেতারে। এরপর [[শুভ গুহঠাকুরতা]]র [[রবীন্দ্র সঙ্গীত]] শেখাবার প্রতিষ্ঠান 'দক্ষিণী'তে নিয়মিত রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন। এক সময় কলিম শরাফী দক্ষিণীতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষক হিসেবে। দক্ষিণীতে কলিম শরাফী সঙ্গীতগুরু [[দেবব্রত বিশ্বাস]], [[হেমন্ত মুখোপাধ্যায়]] ও [[সুচিত্রা মিত্র]]ের সাহচর্য পেয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে নীতিগত বিরোধের কারণে মহর্ষি [[মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য]], [[শম্ভু মিত্র]], [[তৃপ্তি মিত্র]], [[অশোক মজুমদার]], [[মোহাম্মদ ইসরাইল]], কলিম শরাফী প্রমুখ সংঘ থেকে বেরিয়ে এসে গঠন করেন নাট্যসংস্থা 'বহুরূপী'। |
||
৩১ নং লাইন: | ৩১ নং লাইন: | ||
কলিম শরাফী ১৯৬২ সালে ''সোনার কাজল'' চলচ্চিত্রে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন পরবর্তী প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার [[জহির রায়হান]]। এ সময় কলিম শরাফীর সঙ্গীত পরিচালনায় নির্মিত [[প্রামাণ্যচিত্র]] [[ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব]]ে পুরস্কার অর্জন করে। তারপর 'সূর্যস্নান ছবিতে ''পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে'' গানটি গেয়ে তিনি শ্রোতামহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। এছাড়া কবিয়াল [[রমেশ শীল|রমেশ শীলের]] জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেন কলিম শরাফী। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় প্রথম টিভি সেন্টার চালু হলে তিনি সেখানে প্রোগ্রাম পরিচালক পদে যোগ দেন। কলিম শরাফী ১৯৬৯ সালে [[সত্যেন সেন|সত্যেন সেনের]] সঙ্গে [[উদীচী গণসাংস্কৃতিক সংগঠন|উদীচীর]] কর্মকাণ্ডে যোগ দেন এবং ১৯৭৭ থেকে প্রায় অনেকগুলো বছর সভাপতি ও সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ'। কলিম শরাফী এই উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। পরে এই 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ'ই 'জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ'-এ পরিণত হয়। |
কলিম শরাফী ১৯৬২ সালে ''সোনার কাজল'' চলচ্চিত্রে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন পরবর্তী প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার [[জহির রায়হান]]। এ সময় কলিম শরাফীর সঙ্গীত পরিচালনায় নির্মিত [[প্রামাণ্যচিত্র]] [[ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব]]ে পুরস্কার অর্জন করে। তারপর 'সূর্যস্নান ছবিতে ''পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে'' গানটি গেয়ে তিনি শ্রোতামহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। এছাড়া কবিয়াল [[রমেশ শীল|রমেশ শীলের]] জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেন কলিম শরাফী। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় প্রথম টিভি সেন্টার চালু হলে তিনি সেখানে প্রোগ্রাম পরিচালক পদে যোগ দেন। কলিম শরাফী ১৯৬৯ সালে [[সত্যেন সেন|সত্যেন সেনের]] সঙ্গে [[উদীচী গণসাংস্কৃতিক সংগঠন|উদীচীর]] কর্মকাণ্ডে যোগ দেন এবং ১৯৭৭ থেকে প্রায় অনেকগুলো বছর সভাপতি ও সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ'। কলিম শরাফী এই উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। পরে এই 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ'ই 'জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ'-এ পরিণত হয়। |
||
কলিম শরাফী ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে 'সঙ্গীত ভবন' নামে একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই শিল্পী কলিম শরাফী এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। কলিম শরাফী একাধিক চলচ্চিত্রে কণ্ঠদান করেছেন ৷ "স্মৃতি অমৃত" |
কলিম শরাফী ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে 'সঙ্গীত ভবন' নামে একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই শিল্পী কলিম শরাফী এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। কলিম শরাফী একাধিক চলচ্চিত্রে কণ্ঠদান করেছেন ৷ "স্মৃতি অমৃত" তার প্রকাশিত গ্রন্থ৷ তার গানের পনেরোটি ক্যাসেট ও তিনটি সিডি ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে৷ তিনি শিল্পকলা একাডেমি কাউন্সিল ও শিশু একাডেমি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া [[বাংলাদেশ বেতার]] টিভি শিল্পী সংস্থা, [[বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা]] ও [[নাগরিক নাট্য অঙ্গন]]ের সভাপতি ছিলেন। |
||
==গানের অ্যালবাম সমূহ== |
|||
সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক জীবনে কলিম শরাফীর মাত্র ৫টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। |
== গানের অ্যালবাম সমূহ == |
||
সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক জীবনে কলিম শরাফীর মাত্র ৫টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো হলো: |
|||
* |
* এই কথাটি মনে |
||
* |
* আমি যখন তার |
||
* |
* কলিম শরাফীর যত |
||
* |
* রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান |
||
* |
* নবজীবনের গান ([[জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র]]ের কথা ও সুর) |
||
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে [[রবীন্দ্র সংগীত]] "ভরা থাক স্মৃতিসুধায়" শীর্ষক ক্যাসেটটি কলকাতা হতে প্রকাশিত হয়।<ref name="সংসদ"/> |
|||
== রাজনৈতিক জীবন == |
== রাজনৈতিক জীবন == |
||
শরাফী যখন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী, তখন [[সুভাষ চন্দ্র বসু|নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু]] কলকাতায় অবস্থিত হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের আন্দোলন শুরু করেন। কিশোর কলিম শরাফী সে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় স্কুলের এক মিছিলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে তিনি নির্যাতিত হন। এরপর ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। পরীক্ষার পরই তিনি [[মহাত্মা গান্ধী|গান্ধীর]] [[ভারত ছাড় আন্দোলন]]ে যুক্ত হন। ১৯৪২ সালে এ আন্দোলনের সময় নিজ এলাকায় এক সভায় সভাপতিত্ব করার কয়েক দিন পর ডিফেন্স অব ইন্ডিয়া অ্যাক্টের আওতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। কারাগারেই আন্দোলনকর্মী বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে পরিচয় হয় |
শরাফী যখন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী, তখন [[সুভাষ চন্দ্র বসু|নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু]] কলকাতায় অবস্থিত হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের আন্দোলন শুরু করেন। কিশোর কলিম শরাফী সে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় স্কুলের এক মিছিলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে তিনি নির্যাতিত হন। এরপর ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। পরীক্ষার পরই তিনি [[মহাত্মা গান্ধী|গান্ধীর]] [[ভারত ছাড় আন্দোলন]]ে যুক্ত হন। ১৯৪২ সালে এ আন্দোলনের সময় নিজ এলাকায় এক সভায় সভাপতিত্ব করার কয়েক দিন পর ডিফেন্স অব ইন্ডিয়া অ্যাক্টের আওতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। কারাগারেই আন্দোলনকর্মী বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বীরভূম জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সেক্রেটারির দায়িত্ব নেন। [[পঞ্চাশের মন্বন্তর]] হিসেবে পরিচিত দুর্ভিক্ষের সময় [[লঙ্গরখানা]]য় কাজ করার সময় তিনি [[কমিউনিস্ট]] নেতা [[মুজফ্ফর আহ্মেদ (রাজনীতিবিদ)|কমরেড মুজাফফর আহমেদের]] সংস্পর্শে আসেন, যোগ দেন কমিউনিস্ট পার্টিতে। |
||
পঞ্চাশের মন্বন্তরে কলিম শরাফী দল বেঁধে গান গেয়ে গেয়ে পীড়িত মানুষজনের জন্য অর্থ সাহায্য সংগ্রহ করেছেন। সাথে সাথে তিনি লঙ্গরখানায় খাদ্য বিতরণে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এরপর ১৯৪৫ সালে শরাফী ভর্তি হন [[হেতমপুর]] [[কৃষ্ণনাথ কলেজ]]ে। প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কৃষ্ণনাথ কলেজ ছেড়ে তিনি ভর্তি হন ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলে (বর্তমান নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল)। তিনি এখানেও পড়াশোনা চালাতে পারেননি। মূলত অর্থনৈতিক কারণেই পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলতে হয়। শেষ চেষ্টা হিসেবে ১৯৪৬ সালে [[সিটি কলেজ, কলকাতা]]য় বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৬ সালেই শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এসময় তিনি পূর্বোল্লিখিত গণনাট্য সংঘের হয়ে 'বর্ডার গার্ড'-এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি আবারও গ্রেফতার হন। অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়। |
পঞ্চাশের মন্বন্তরে কলিম শরাফী দল বেঁধে গান গেয়ে গেয়ে পীড়িত মানুষজনের জন্য অর্থ সাহায্য সংগ্রহ করেছেন। সাথে সাথে তিনি লঙ্গরখানায় খাদ্য বিতরণে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এরপর ১৯৪৫ সালে শরাফী ভর্তি হন [[হেতমপুর]] [[কৃষ্ণনাথ কলেজ]]ে। প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কৃষ্ণনাথ কলেজ ছেড়ে তিনি ভর্তি হন ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলে (বর্তমান নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল)। তিনি এখানেও পড়াশোনা চালাতে পারেননি। মূলত অর্থনৈতিক কারণেই পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলতে হয়। শেষ চেষ্টা হিসেবে ১৯৪৬ সালে [[সিটি কলেজ, কলকাতা]]য় বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৬ সালেই শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এসময় তিনি পূর্বোল্লিখিত গণনাট্য সংঘের হয়ে 'বর্ডার গার্ড'-এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি আবারও গ্রেফতার হন। অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়। |
||
৫২ নং লাইন: | ৫৪ নং লাইন: | ||
== মৃত্যু == |
== মৃত্যু == |
||
২রা নভেম্বর |
বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগে ২০১০ সালের ২রা নভেম্বর <ref name="সংসদ"/> সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে নিজ বাসভবনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে নামাজে জানাজ়া শেষে কেন্দ্রীয় [[শহীদ মিনার]]ে রাষ্ট্রীয় সম্মাননার পর [[মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান]]ে তাঁকে সমাহিত করা হয়। |
||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
||
{{সূত্র তালিকা|colwidth=30em}} |
{{সূত্র তালিকা|colwidth=30em}} |
||
* [http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=140453 বিডিনিউজ২৪]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=জানুয়ারি ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}, নভেম্বর ২, ২০১০। |
* [http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=140453 বিডিনিউজ২৪]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=জানুয়ারি ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}, নভেম্বর ২, ২০১০। |
||
* [http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-11-03/news/106389 প্রথম আলো], নভেম্বর ৩, ২০১০। |
* [http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-11-03/news/106389 প্রথম আলো] {{ওয়েব আর্কাইভ|url=https://web.archive.org/web/20180126171649/http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-11-03/news/106389 |date=২০১৮-০১-২৬ }}, নভেম্বর ৩, ২০১০। |
||
* [https://web.archive.org/web/20140407134712/http://www.cabinet.gov.bd/view_award.php?lang=en&award_person_id=102 ক্যাবিনেট ডিভিশন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।] |
* [https://web.archive.org/web/20140407134712/http://www.cabinet.gov.bd/view_award.php?lang=en&award_person_id=102 ক্যাবিনেট ডিভিশন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।] |
||
* [https://web.archive.org/web/20101105235328/http://ittefaq.com.bd/content/2010/11/03/news0404.htm ইত্তেফাক], নভেম্বর ৩, ২০১০। |
* [https://web.archive.org/web/20101105235328/http://ittefaq.com.bd/content/2010/11/03/news0404.htm ইত্তেফাক], নভেম্বর ৩, ২০১০। |
||
* [http://dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Tax&pub_no=331&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=7 কালের কন্ঠ], নভেম্বর ৩, ২০১০। |
* [http://dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Tax&pub_no=331&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=7 কালের কন্ঠ] {{ওয়েব আর্কাইভ|url=https://web.archive.org/web/20201226041334/http://dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Tax&pub_no=331&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=7 |date=২৬ ডিসেম্বর ২০২০ }}, নভেম্বর ৩, ২০১০। |
||
==বহিঃসংযোগ== |
== বহিঃসংযোগ == |
||
{{রবীন্দ্র সঙ্গীতের উল্লেখযোগ্য শিল্পী}} |
{{রবীন্দ্র সঙ্গীতের উল্লেখযোগ্য শিল্পী}} |
||
{{স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী}} |
{{স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী}} |
||
{{একুশে পদক বিজয়ী ১৯৮৫}} |
{{একুশে পদক বিজয়ী ১৯৮৫}} |
||
{{মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার}} |
|||
[[বিষয়শ্রেণী:১৯২৪-এ জন্ম]] |
[[বিষয়শ্রেণী:১৯২৪-এ জন্ম]] |
||
৭৪ নং লাইন: | ৭৭ নং লাইন: | ||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী গায়ক]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী গায়ক]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার সঙ্গীতশিল্পী]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার সঙ্গীতশিল্পী]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী: |
[[বিষয়শ্রেণী:রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:মিরপুর |
[[বিষয়শ্রেণী:মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাধিস্থ]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলো]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলো]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী: |
[[বিষয়শ্রেণী:মাদ্রাসা-ই আলিয়া, কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষার্থী]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী]] |
|||
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি গীতিকার]] |
|||
[[বিষয়শ্রেণী:স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী]] |
|||
[[বিষয়শ্রেণী:একুশে পদক বিজয়ী]] |
|||
[[বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীতশিল্পী]] |
১৯:৫৬, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
কলিম শরাফী | |
---|---|
মে ৮, ১৯২৪ – নভেম্বর ২, ২০১০ | |
জন্ম তারিখ | ৮ মে ১৯২৪ |
জন্মস্থান | খয়রাডিহি, বীরভূম, বাংলা প্রেসিডেন্সি (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) |
মৃত্যু তারিখ | ২ নভেম্বর ২০১০ | (বয়স ৮৬)
মৃত্যুস্থান | ঢাকা, (বাংলাদেশ) |
আন্দোলন | কমিউনিস্ট আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন |
প্রধান সংগঠন | ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি |
কলিম শরাফী (৮ মে ১৯২৪ - ২ নভেম্বর ২০১০) হলেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার পূর্ণ নাম মাখদুমজাদা শাহ সৈয়দ কলিম আহমেদ শরাফী। দেশাত্মবোধক গানের ক্ষেত্রেও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এর বাইরে তিনি ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
[সম্পাদনা]কলিম শরাফী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সিউড়ি সদর মহকুমার অন্তর্গত খয়রাদিহি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন৷ কলিম শরাফীর পিতার নাম সামি আহমেদ শরাফী ও মাতার নাম আলিয়া বেগম। মাত্র চার বছর বয়সে মা আলিয়া বেগমকে হারান তিনি। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া কলিম শরাফীর আরও দুই বোন রয়েছে। তার পূর্বপুরুষ সোনারগাঁ থেকে এসেছিলেন বীরভূমে।[১] তার হাতেখড়ি হয় আরবি ওস্তাদ আর বাংলা পণ্ডিত মশাইয়ের হাতে। এরপর ১৯২৯ সালে তিনি পাঠশালায় ভর্তি হয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তাঁতিপাড়া প্রাইমারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে চলে আসেন কলকাতায় বাবা সামি আহমেদ শরাফীর কাছে। এখানে ছাত্রবয়সে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন। আঠারো বৎসর বয়সে ধরা পড়ে বছর দুই জেল খাটেন। কারাগারেই তিনি কমিউনিস্ট নেতাদের সংস্পর্শে আসেন।[১]পরে ১৯৩৫ সালে ভর্তি হন মাদ্রাসা-ই-আলিয়াতে। ইঙ্গ-পারসীক বিভাগে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সে সময় সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সার তার সহপাঠী ছিলেন। তিনি ডাক্তারি পড়তে ভরতি হয়েছিলেন, কিন্তু পড়া শেষ করেন নি।[১] কলিম কলকাতার বিখ্যাত সঙ্গীত বিদ্যালয় 'দক্ষিণী' থেকে ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন। রবীন্দ্র সংগীত শেখেন শুভ গুহঠাকুরতার কাছে।[১]
পূর্ববঙ্গে উদ্বসন
[সম্পাদনা]শরাফী ১৯৫০ সালে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৬৪-৬৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রোগ্রাম পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ১৯৬৯-৭২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান গ্রামোফোন কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৪-৭৬ সালে তিনি বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রাতিস্বিক জীবন
[সম্পাদনা]কলিম শরাফী প্রথমবার পরিণয়ে আবদ্ধ হন ১৯৪৯ সালে। প্রথমস্ত্রীর সাথে ১৯৫৭ সালে বিচ্ছেদ ঘটার পর ১৯৬৩ সালে দ্বিতীয়বারের মতো দার পরিগ্রহ করেন। কলিম শরাফীর দ্বিতীয় স্ত্রী অধ্যাপিকা নওশেবা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। কলিম শরাফীর দুই সন্তানের নাম আলেয়া শরাফী এবং আজিজ শরাফী।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড
[সম্পাদনা]রক্ষণশীল পরিবার থেকে উঠে আসলেও কলিম শরাফী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সবসময়ে নিয়োজিত রেখেছেন। সংগীত, নাটক ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের আকর্ষণে তিনি প্রথমে ভাগনাস, পরে রহুরূপীর সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘে যোগ দিয়ে কলকাতার হাজরা পার্কে হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে সর্বপ্রথম গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপর ১৯৪৬ সালে বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানি এইচএমভি থেকে বের হয় কলিম শরাফীর প্রথম গণসঙ্গীতের রেকর্ড। প্রায় সাথে সাথেই নিয়মিত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন কলকাতা বেতারে। এরপর শুভ গুহঠাকুরতার রবীন্দ্র সঙ্গীত শেখাবার প্রতিষ্ঠান 'দক্ষিণী'তে নিয়মিত রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন। এক সময় কলিম শরাফী দক্ষিণীতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষক হিসেবে। দক্ষিণীতে কলিম শরাফী সঙ্গীতগুরু দেবব্রত বিশ্বাস, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সুচিত্রা মিত্রের সাহচর্য পেয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে নীতিগত বিরোধের কারণে মহর্ষি মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, অশোক মজুমদার, মোহাম্মদ ইসরাইল, কলিম শরাফী প্রমুখ সংঘ থেকে বেরিয়ে এসে গঠন করেন নাট্যসংস্থা 'বহুরূপী'।
১৯৪৭ এ দেশ বিভাগের পর কলকাতায় আবার শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এসময় কর্মহীন হয়ে পড়েন কলিম শরাফী। ১৯৫০ সালে তিনি তার স্ত্রী কামেলা খাতুন ও একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়। ঢাকায় এসেই ক্যাজুয়াল আর্টিস্ট হিসেবে যোগ দেন রেডিওতে। ১৯৫১ সালে ঢাকা ছেড়ে তিনি চলে যান চট্টগ্রামে। গড়ে তোলেন 'প্রান্তিক' নামে একটি সংগঠন। ১৯৫৬ সালে শেরে বাংলার মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করে ৯২ ধারা জারি করার ফলে কলিম শরাফীকে আত্মগোপন করতে হয়। সে বছরের শেষ দিকে তিনি আবার ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় 'হ-য-ব-র-ল' নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এ সংগঠনের ব্যানারেই মঞ্চস্থ করেন 'তাসের দেশ' নাটকটি। সে সময় কলিম শরাফীর সহযোগী ছিলেন ড. আনিসুর রহমান ও ড. রফিকুল ইসলাম। ১৯৫৭ সালে চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো কলিম শরাফী রবীন্দ্র সঙ্গীত গান আকাশ আর মাটি চলচ্চিত্রে। এরপর ১৯৫৮ সালে কলিম শরাফীর গান রেডিওতে সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়। স্বাধীনতা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিলো।
কলিম শরাফী ১৯৬২ সালে সোনার কাজল চলচ্চিত্রে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন পরবর্তী প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান। এ সময় কলিম শরাফীর সঙ্গীত পরিচালনায় নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার অর্জন করে। তারপর 'সূর্যস্নান ছবিতে পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে গানটি গেয়ে তিনি শ্রোতামহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। এছাড়া কবিয়াল রমেশ শীলের জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেন কলিম শরাফী। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় প্রথম টিভি সেন্টার চালু হলে তিনি সেখানে প্রোগ্রাম পরিচালক পদে যোগ দেন। কলিম শরাফী ১৯৬৯ সালে সত্যেন সেনের সঙ্গে উদীচীর কর্মকাণ্ডে যোগ দেন এবং ১৯৭৭ থেকে প্রায় অনেকগুলো বছর সভাপতি ও সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ'। কলিম শরাফী এই উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। পরে এই 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ'ই 'জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ'-এ পরিণত হয়।
কলিম শরাফী ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে 'সঙ্গীত ভবন' নামে একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই শিল্পী কলিম শরাফী এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। কলিম শরাফী একাধিক চলচ্চিত্রে কণ্ঠদান করেছেন ৷ "স্মৃতি অমৃত" তার প্রকাশিত গ্রন্থ৷ তার গানের পনেরোটি ক্যাসেট ও তিনটি সিডি ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে৷ তিনি শিল্পকলা একাডেমি কাউন্সিল ও শিশু একাডেমি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া বাংলাদেশ বেতার টিভি শিল্পী সংস্থা, বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা ও নাগরিক নাট্য অঙ্গনের সভাপতি ছিলেন।
গানের অ্যালবাম সমূহ
[সম্পাদনা]সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক জীবনে কলিম শরাফীর মাত্র ৫টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো হলো:
- এই কথাটি মনে
- আমি যখন তার
- কলিম শরাফীর যত
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান
- নবজীবনের গান (জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের কথা ও সুর)
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে রবীন্দ্র সংগীত "ভরা থাক স্মৃতিসুধায়" শীর্ষক ক্যাসেটটি কলকাতা হতে প্রকাশিত হয়।[১]
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]শরাফী যখন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী, তখন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কলকাতায় অবস্থিত হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের আন্দোলন শুরু করেন। কিশোর কলিম শরাফী সে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় স্কুলের এক মিছিলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে তিনি নির্যাতিত হন। এরপর ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। পরীক্ষার পরই তিনি গান্ধীর ভারত ছাড় আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৪২ সালে এ আন্দোলনের সময় নিজ এলাকায় এক সভায় সভাপতিত্ব করার কয়েক দিন পর ডিফেন্স অব ইন্ডিয়া অ্যাক্টের আওতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। কারাগারেই আন্দোলনকর্মী বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বীরভূম জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সেক্রেটারির দায়িত্ব নেন। পঞ্চাশের মন্বন্তর হিসেবে পরিচিত দুর্ভিক্ষের সময় লঙ্গরখানায় কাজ করার সময় তিনি কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মুজাফফর আহমেদের সংস্পর্শে আসেন, যোগ দেন কমিউনিস্ট পার্টিতে।
পঞ্চাশের মন্বন্তরে কলিম শরাফী দল বেঁধে গান গেয়ে গেয়ে পীড়িত মানুষজনের জন্য অর্থ সাহায্য সংগ্রহ করেছেন। সাথে সাথে তিনি লঙ্গরখানায় খাদ্য বিতরণে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এরপর ১৯৪৫ সালে শরাফী ভর্তি হন হেতমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে। প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কৃষ্ণনাথ কলেজ ছেড়ে তিনি ভর্তি হন ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলে (বর্তমান নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল)। তিনি এখানেও পড়াশোনা চালাতে পারেননি। মূলত অর্থনৈতিক কারণেই পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলতে হয়। শেষ চেষ্টা হিসেবে ১৯৪৬ সালে সিটি কলেজ, কলকাতায় বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৬ সালেই শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এসময় তিনি পূর্বোল্লিখিত গণনাট্য সংঘের হয়ে 'বর্ডার গার্ড'-এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি আবারও গ্রেফতার হন। অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের সংগঠিত করার কাজ করেন তিনি। যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে গণ-আদালতে সম্পৃক্ত হওয়ায় ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় কলিম শরাফীকে অভিযুক্ত করা হয়।
রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি স্বীকৃতি
[সম্পাদনা]সঙ্গীত শিল্পে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জনাব কলিম শরাফী একুশে পদক (১৯৮৫), স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৯), নাসিরউদ্দিন স্বর্ণ পদক (১৯৮৮), বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ স্বর্ণ পদক (১৯৮৭), সত্যজিৎ রায় পুরস্কার (১৯৯৫) এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র হতে কৃতি বাঙালি সম্মাননা পদক (১৯৮৮)-এ ভূষিত হন। বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ, রবীন্দ্র সুবর্ণ জয়ন্তী পাটনা, কলকাতার শিল্প মেলার বঙ্গ সংস্কৃতি, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, সিকোয়েন্স সম্মাননা পদ, রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী পদক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গুণিজন সংবর্ধনা, পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৫তম জন্ম বার্ষিকী, ডি-৮ আর্ট অ্যান্ড কালচার ফেস্টিভেল, পাকিস্তান ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সম্মানিত হন। সর্বশেষ তিনি বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত 'রবীন্দ্র পুরস্কার-২০১০'-এ ভূষিত হন।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগে ২০১০ সালের ২রা নভেম্বর [১] সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে নিজ বাসভবনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে নামাজে জানাজ়া শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রীয় সম্মাননার পর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- বিডিনিউজ২৪[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], নভেম্বর ২, ২০১০।
- প্রথম আলো ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৮-০১-২৬ তারিখে, নভেম্বর ৩, ২০১০।
- ক্যাবিনেট ডিভিশন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
- ইত্তেফাক, নভেম্বর ৩, ২০১০।
- কালের কন্ঠ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে, নভেম্বর ৩, ২০১০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ১৯২৪-এ জন্ম
- ২০১০-এ মৃত্যু
- বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী
- সংস্কৃতিতে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
- বাংলাদেশী গায়ক
- বাংলা ভাষার সঙ্গীতশিল্পী
- রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী
- মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাধিস্থ
- বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলো
- মাদ্রাসা-ই আলিয়া, কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী
- বাঙালি গীতিকার
- স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
- একুশে পদক বিজয়ী
- পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীতশিল্পী