অশ্বত্থামা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অঙ্গরাগ রায় (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা |
অঙ্গরাগ রায় (আলোচনা | অবদান) ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা |
||
(৩ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ১৪টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{Infobox character |
{{Infobox character |
||
| image = Draupadi and Ashvatthaman, Punjab Hills c. 1730.jpg |
|||
| |
| alt = |
||
| caption = অশ্বত্থামা (ডানদিকে) দ্রৌপদী এবং পাণ্ডবদের দ্বারা ক্ষমা প্রাপ্তির পর চলে যায় , ১৮শ শতাব্দীর পাহাড়ি ক্ষুদ্রাকৃতি চিত্র |
|||
| alt = Ashwatthama |
| alt = Ashwatthama |
||
| caption = অশ্বত্থামা নারায়ণস্ত্র ব্যবহার করছে |
|||
| family = *[[দ্রোণাচার্য]] (পিতা) |
| family = *[[দ্রোণাচার্য]] (পিতা) |
||
*[[কৃপী]] (মাতা) |
*[[কৃপী]] (মাতা) |
||
১৫ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
}} |
}} |
||
'''অশ্বত্থামা''' ([[সংস্কৃত]]:अश्वत्थामा) হল গুরু [[দ্রোণাচার্য]] ও কুলগুরু [[কৃপাচার্য|কৃপাচার্যের]] বোন [[কৃপি|কৃপির]] পুত্র। তিনি ছিলেন মহাভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ |
'''অশ্বত্থামা''' ([[সংস্কৃত]]:अश्वत्थामा) হল গুরু [[দ্রোণাচার্য]] ও কুলগুরু [[কৃপাচার্য|কৃপাচার্যের]] বোন [[কৃপি|কৃপির]] পুত্র। তিনি ছিলেন মহাভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি ঋষি [[ভরদ্বাজ মুনি|ভরদ্বাজের]] নাতি ছিলেন। অশ্বত্থামা [[হস্তিনাপুর|হস্তিনাপুরের]] শাসকদের অধীনস্থ হয়ে অহিছত্রকে রাজধানী করে পাঞ্চালার উত্তরাঞ্চল শাসন করেছিলেন। তিনি ছিলেন মহারথী,<ref name="Ganguly1"/> যিনি [[কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ|কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে]] পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে কৌরবের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। ভগবান [[শিব]] দ্বারা আশীর্বাদ পেয়ে তিনি চিরঞ্জীবী (অমর) হয়েছিলেন। |
||
অশ্বত্থামার কথিত মৃত্যুর প্রতারণামূলক চক্রান্ত তার শোকার্ত পিতা [[দ্রোণাচার্য|দ্রোণকে]] বধ করা হয়। তিনি [[কুরুক্ষেত্র]] যুদ্ধে কৌরবদের চূড়ান্ত তথা সর্বশেষ সেনাপতি নিযুক্ত হন। শোক ও ক্রোধে কাবু হয়ে তিনি এক রাতের আক্রমণে পাণ্ডব শিবিরে উপস্থিত সমস্ত যোদ্ধাদের বধ করেন। তিনি [[মহাভারত|মহাভারতের]] সবচেয়ে বিশিষ্ট যোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন। মহাভারতের অংশাবতরণাধ্যায় অনুসারে, মহাদেব, [[যম (দেবতা)|যম]], [[কাম (ভারতীয় দর্শন)|কাম]], [[ক্রোধ (ভারতীয় দর্শন)|ক্রোধের]] মিলিত অংশে অশ্বত্থামা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার নেত্রযুগল ছিল পদ্ম-পলাশের মতো। <ref>মহাভারতের চরিতাবলী–সুখময় ভট্টাচার্য</ref> |
অশ্বত্থামার কথিত মৃত্যুর প্রতারণামূলক চক্রান্ত তার শোকার্ত পিতা [[দ্রোণাচার্য|দ্রোণকে]] বধ করা হয়। তিনি [[কুরুক্ষেত্র]] যুদ্ধে কৌরবদের চূড়ান্ত তথা সর্বশেষ সেনাপতি নিযুক্ত হন। শোক ও ক্রোধে কাবু হয়ে তিনি এক রাতের আক্রমণে পাণ্ডব শিবিরে উপস্থিত সমস্ত যোদ্ধাদের বধ করেন। তিনি [[মহাভারত|মহাভারতের]] সবচেয়ে বিশিষ্ট যোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন। মহাভারতের অংশাবতরণাধ্যায় অনুসারে, মহাদেব, [[যম (দেবতা)|যম]], [[কাম (ভারতীয় দর্শন)|কাম]], [[ক্রোধ (ভারতীয় দর্শন)|ক্রোধের]] মিলিত অংশে অশ্বত্থামা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার নেত্রযুগল ছিল পদ্ম-পলাশের মতো। <ref>মহাভারতের চরিতাবলী–সুখময় ভট্টাচার্য</ref> |
||
== জন্ম == |
== জন্ম == |
||
অশ্বত্থামা এর পিতার নাম গুরু [[দ্রোণাচার্য|দ্রোণ]] আর তার মাতার নাম কৃপী। তিনি একটি বনের গুহায় জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমানে তপকেশ্বর মহাদেব মন্দির, দেরাদুন। উত্তরাখণ্ড)। দ্রোণ ভগবান [[শিব]]কে সন্তুষ্ট করার জন্য বহু বছর ধরে কঠোর তপস্যা করেন যাতে ভগবান শিবের মতো পরাক্রমশালী পুত্র লাভ করেন। অশ্বত্থামা তার কপালে একটি মূল্যবান এবং শক্তিশালী রত্ন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন প্রভু [[শিব]] এর আশীর্বাদ হিসাবে যা তাকে মানুষের চেয়ে নীচের সমস্ত জীবের উপর ক্ষমতা দেয়; এটি তাকে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি, বার্ধক্য এবং সকল প্রকার রোগ, অস্ত্র এবং দেবতাদের থেকে রক্ষা করে। ঐশ্বরিক রত্নটি প্রায় অশ্বত্থামাকে অজেয় এবং অমর করে তোলে। জন্মের সময় অশ্বত্থামা [[অশ্ব|অশ্বের]] হ্রেষার মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরূপ নামকরণ করা হয়। দ্রোণ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হলেও সামান্য অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ে সরল জীবনযাপন করতেন। ফলস্বরূপ, অশ্বত্থামা এক কঠিন শৈশব অতিবাহিত করে, এমনকি তার পরিবার |
অশ্বত্থামা এর পিতার নাম গুরু [[দ্রোণাচার্য|দ্রোণ]] আর তার মাতার নাম কৃপী। তিনি একটি বনের গুহায় জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমানে তপকেশ্বর মহাদেব মন্দির, দেরাদুন। উত্তরাখণ্ড)। দ্রোণ ভগবান [[শিব]]কে সন্তুষ্ট করার জন্য বহু বছর ধরে কঠোর তপস্যা করেন যাতে ভগবান শিবের মতো পরাক্রমশালী পুত্র লাভ করেন। অশ্বত্থামা তার কপালে একটি মূল্যবান এবং শক্তিশালী রত্ন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন প্রভু [[শিব]] এর আশীর্বাদ হিসাবে যা তাকে মানুষের চেয়ে নীচের সমস্ত জীবের উপর ক্ষমতা দেয়; এটি তাকে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি, বার্ধক্য এবং সকল প্রকার রোগ, অস্ত্র এবং দেবতাদের থেকে রক্ষা করে। ঐশ্বরিক রত্নটি প্রায় অশ্বত্থামাকে অজেয় এবং অমর করে তোলে। জন্মের সময় অশ্বত্থামা [[অশ্ব|অশ্বের]] হ্রেষার মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরূপ নামকরণ করা হয়। দ্রোণ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হলেও সামান্য অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ে সরল জীবনযাপন করতেন। ফলস্বরূপ, অশ্বত্থামা এক কঠিন শৈশব অতিবাহিত করে, এমনকি তার পরিবার দুধের খরচও বহন করতে সক্ষম ছিল না। পরিবারকে একটি উন্নত জীবন প্রদান করতে, দ্রোণ তার প্রাক্তন সহপাঠী এবং বন্ধু, [[দ্রুপদ|দ্রুপদের]] কাছ থেকে সাহায্য চাইতে [[পাঞ্চাল|পাঞ্চাল রাজ্যে]] যান, যিনি দ্রোণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি যখন রাজা হবেন, তখন তার রাজ্যের অর্ধেক তার সাথে ভাগ করে নেবেন। যাইহোক, দ্রুপদ তাদের বন্ধুত্বকে অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন যে একজন রাজা এবং একজন ভিক্ষুক বন্ধু হতে পারে না। এই বলে দ্রুপদ দ্রোণকে অপমান করে। |
||
এই ঘটনার পর এবং দ্রোণের দুর্দশা দেখে [[কৃপাচার্য|কৃপ]] দ্রোণকে [[হস্তিনাপুর|হস্তিনাপুরে]] আমন্ত্রণ জানায়। এইভাবে, দ্রোণ [[পাণ্ডব]] এবং [[কৌরব]] উভয়েরই গুরু হন। তাদের সাথে অশ্বত্থামাকেও অস্ত্রবিদ্যায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। <ref name="Ganguly1">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Mahabharata, Book 5: Udyoga Parva: Uluka Dutagamana Parva: section CLXVIII|ইউআরএল=https://www.sacred-texts.com/hin/m05/m05168.htm|সংগ্রহের-তারিখ=2022-12-24|ওয়েবসাইট=www.sacred-texts.com}}</ref> |
এই ঘটনার পর এবং দ্রোণের দুর্দশা দেখে [[কৃপাচার্য|কৃপ]] দ্রোণকে [[হস্তিনাপুর|হস্তিনাপুরে]] আমন্ত্রণ জানায়। এইভাবে, দ্রোণ [[পাণ্ডব]] এবং [[কৌরব]] উভয়েরই গুরু হন। তাদের সাথে অশ্বত্থামাকেও অস্ত্রবিদ্যায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। <ref name="Ganguly1">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Mahabharata, Book 5: Udyoga Parva: Uluka Dutagamana Parva: section CLXVIII|ইউআরএল=https://www.sacred-texts.com/hin/m05/m05168.htm|সংগ্রহের-তারিখ=2022-12-24|ওয়েবসাইট=www.sacred-texts.com}}</ref> |
||
২৫ নং লাইন: | ২৬ নং লাইন: | ||
== যুদ্ধ শিক্ষা == |
== যুদ্ধ শিক্ষা == |
||
অশ্বত্থামার পিতা গুরু দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণ হয়েও তিনি ক্ষত্রিয়ের মতো যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি তার যুদ্ধ শিক্ষা শেখেন তার পিতা [[ভরদ্বাজ মুনি|ভরদ্বাজ]] মুনির কাছ থেকে। তার পিতার দেওয়া শিক্ষাই তিনি তার ছাত্রদের শেখাতেন। যারা ব্রাহ্মণ কুলে জন্মগ্রহণ করে একই সাথে ব্রাহ্মণ্য এবং ক্ষাত্রধর্ম পালন করে, তাদের [[ব্রহ্মক্ষত্রিয়]] বলা হয়। এজন্য [[পরশুরাম|পরশুরামের]] মত অশ্বত্থামা, [[কৃপাচার্য]] এবং [[দ্রোণাচার্য]] তাদেরও [[ব্রহ্মক্ষত্রিয়]] বলা হয়। |
অশ্বত্থামার পিতা গুরু দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণ হয়েও তিনি ক্ষত্রিয়ের মতো যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি তার যুদ্ধ শিক্ষা শেখেন তার পিতা [[ভরদ্বাজ মুনি|ভরদ্বাজ]] মুনির কাছ থেকে। তার পিতার দেওয়া শিক্ষাই তিনি তার ছাত্রদের শেখাতেন। যারা ব্রাহ্মণ কুলে জন্মগ্রহণ করে একই সাথে ব্রাহ্মণ্য এবং ক্ষাত্রধর্ম পালন করে, তাদের [[ব্রহ্মক্ষত্রিয়]] বলা হয়। এজন্য [[পরশুরাম|পরশুরামের]] মত অশ্বত্থামা, [[কৃপাচার্য]] এবং [[দ্রোণাচার্য]] তাদেরও [[ব্রহ্মক্ষত্রিয়]] বলা হয়। |
||
এদিকে তার বাল্যকালের মিত্র রাজা [[দ্রুপদ|দ্রুপদের]] কাছে গেলে তিনি গুরু দ্রোণকে অপমান করেন। আর সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে তিনি হস্তিনাপুরে এসে তার যোগ্য শিষ্য খুঁজতে থাকেন। সেখানে তিনি কৌরব কুমারদের সাথে তার একমাত্র পুত্র অশ্বত্থামাকে যুদ্ধ শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন। গুরু দ্রোণ দেখতে পেলেন সেখানে [[ধনুর্বিদ্যা|ধনুর্বিদ্যাতে]] [[অর্জুন]] বিশেষ দক্ষতা অর্জন করছে, তাই তিনি তার পুত্র অশ্বত্থামাকে সেরা ধনুর্বিদ হবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন। অশ্বত্থামা বহু গুপ্ত [[হিন্দু পৌরাণিক অস্ত্র|ঐশ্বরিক অস্ত্র]] প্রয়োগের কৌশল এবং বিদ্যা পিতার কাছ থেকে শিখেছিলেন। <ref>অশ্বত্থামা</ref><ref>দ্রোণাচার্য্য-অশ্বত্থামা সংবাদ</ref> |
|||
রাজকুমারদের সাথে অশ্বত্থামার থাকাকালীন, [[দুর্যোধন]] ঘোড়ার প্রতি অশ্বত্থামার অনুরাগ দেখেন এবং তাকে একটি ভাল জাতের ঘোড়া উপহার দেন। বিনিময়ে, দুর্যোধন [[হস্তিনাপুর|হস্তিনাপুরের]] প্রতি দ্রোণের কর্তব্য-নির্ভর আনুগত্য ছাড়াও নিজের প্রতি এবং বর্ধিতভাবে কৌরবদের প্রতি অশ্বত্থামার ব্যক্তিগত আনুগত্য লাভ করেন। |
|||
যখন দ্রোণ তাঁর শিষ্যদের [[দ্রুপদ|দ্রুপদকে]] বন্দী করার অনুরোধ জ্ঞাপন করে নিজ দক্ষিণা দিতে বলেন, কৌরবরা ব্যর্থ হন, তখন [[পাণ্ডব|পাণ্ডবরা]] দ্রুপদকে পরাজিত করেন এবং তাঁকে দ্রোণের সামনে হাজির করেন। দ্রোণ দ্রুপদের উত্তরদিকস্থ অর্ধেক রাজ্য অধিকার করেন এবং অশ্বত্থামাকে রাজা হিসাবে রাজমুকুট প্রদান করেন, যার রাজধানী [[অহিচ্ছত্র|অহিচ্ছত্রে]] ছিল। |
|||
== কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ও অশ্বত্থামা == |
== কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ও অশ্বত্থামা == |
||
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ অশ্বত্থামা কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেন। আর তার পিতা গুরু দ্রোণ তার ছেলে অশ্বত্থামার স্নেহের কারণে কৌরবদের পক্ষে থাকেন। এই কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে অশ্বত্থামার বিশেষ অবদান রয়েছে। তিনি পাণ্ডবদের বহু সেনা হত্যা করেন। তাকে বধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। |
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ অশ্বত্থামা কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেন। আর তার পিতা গুরু দ্রোণ তার ছেলে অশ্বত্থামার স্নেহের কারণে কৌরবদের পক্ষে থাকেন। এই কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে অশ্বত্থামার বিশেষ অবদান রয়েছে। তিনি পাণ্ডবদের বহু সেনা হত্যা করেন। তাকে বধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। |
||
যুদ্ধের ১৪ তম দিবসে, তিনি অঞ্জনপর্বা ( [[ঘটোৎকচ|ঘটোৎকচের]] শক্তিশালী পুত্র) সহ [[রাক্ষস|রাক্ষসদের]] একটি দলকে বধ করেন এবং ঘটোৎকচকেও পরাজিত করেন, কিন্তু তার মায়া মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হন। তিনি [[জয়দ্রথ|জয়দ্রথের]] কাছে পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বেশ কয়েকবার [[অর্জুন|অর্জুনের]] বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু পরাজিত হন এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন। [[জয়দ্রথ|জয়দ্রথকে]] রক্ষা করার পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন, অশ্বত্থামা, এক সময়ে তার সর্বাস্ত্র বাণ ব্যবহার করেন এবং [[দুর্যোধন|দুর্যোধনের]] প্রতি ক্রুদ্ধ [[অর্জুন]] কর্তৃক প্রবর্তিত শক্তিশালী মানবাস্ত্র বাণটি ধ্বংস করে [[দুর্যোধন|দুর্যোধনের]] ঐশ্বরিক স্বর্গীয় বর্ম এবং জীবন সফলভাবে রক্ষা করেন। |
|||
[[চিত্র:Sadiq,_bhima_uccide_l'elefante_asvatthama,_india_del_nord,_periodo_mogul,_1598.jpg|থাম্ব|[[ভীম]] অশ্বত্থামা নামে একটি হাতিকে বধ করেন। রাজনামার ফোলিও।]] |
|||
যুদ্ধের দশম দিনে, [[ভীষ্ম|ভীষ্মের]] পতনের পর, [[দ্রোণাচার্য|দ্রোণ]] কৌরব সৈন্যবাহিনীর সর্বোচ্চ সেনাপতি হন। তিনি [[দুর্যোধন|দুর্যোধনকে]] প্রতিশ্রুতি দেন যে [[যুধিষ্ঠির|যুধিষ্ঠিরকে]] বন্দী করবেন, কিন্তু তিনি বারবার তা করতে ব্যর্থ হন। দুর্যোধন তাকে কটূক্তি করে এবং অপমান করে, যা অশ্বত্থামাকে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ করে, যার ফলে অশ্বত্থামা এবং দুর্যোধনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে দ্রোণাচার্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলে দ্রোণকে বধ করার জন্য [[পাণ্ডব|পাণ্ডবগণ]] [[কৃষ্ণ|শ্রীকৃষ্ণের]] সাথে পরামর্শ করেন। [[কৃষ্ণ]] জানতেন সশস্ত্র দ্রোণকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। তখন শ্রীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের বলেন কোন ভাবে যদি গুরু দ্রোণের কানে অশ্বত্থামার মৃত্যুর খবর পোঁছানো যায় তাহলে সে সময় [[ধৃষ্টদ্যুম্ন]] তাঁকে হত্যা করবে। শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শ মতো [[ভীম]] পাণ্ডবপক্ষের ইন্দ্রবর্মার অশ্বত্থামা নামক হাতিকে হত্যা করেন এবং বলেন অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন [[যুধিষ্ঠির]]। আর একমাত্র গুরু দ্রোণ যুধিষ্ঠিরের কথাকে বিশ্বাস করবেন। তাই যুধিষ্ঠির দ্রোণের উদ্দেশ্যে 'অশ্বত্থামা হতঃ- ইতি গজ' (অশ্বত্থামা নামক হাতী নিহত হয়েছে) বাক্য উচ্চারণ করেন। '''ইতি গজ''' শব্দটি আস্তে বলাতে দ্রোণাচার্য মনে করেন যে তার পুত্র অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর দ্রোণাচার্য অস্ত্র ত্যাগ করে [[ব্রহ্মলোক|ব্রহ্মলোকে]] যাত্রার মানসে ধ্যানস্থ হন। এরপর ধৃষ্টদ্যুম্ন ধ্যানস্থ দ্রোণাচার্যকে হত্যা করেন। আর তাতে অশ্বত্থামা ভীষণ খেপে যায়। <ref>অশ্বত্থামা কর্ত্তৃক কর্ণকে ভর্ৎসনা</ref> |
|||
প্রতারণামূলক উপায়ে তার পিতাকে হত্যার বৃত্তান্ত জানার পরে, অশ্বত্থামা ক্রোধে জ্বলে ওঠেন এবং পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে [[নারায়ণাস্ত্র|নারায়ণাস্ত্রের]] আহ্বান জানান। |
|||
যখন অস্ত্র আহ্বান করা হয়, তীব্র বাতাস বইতে শুরু করে, বজ্রধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয় এবং প্রতিটি পাণ্ডব সৈন্যের উদ্দেশ্যে তীর সৃষ্টি হয়। [[হিন্দু পৌরাণিক অস্ত্র|অস্ত্র]] নিরস্ত্র লোকদের উপেক্ষা করে জেনে, [[কৃষ্ণ]] সমস্ত সৈন্যকে তাদের রথ পরিত্যাগ করে নিরস্ত্র হওয়ার নির্দেশ দেন। তাদের সৈন্যদের নিরস্ত্র করার পরে ( ভীমকে অতি কষ্টে নিরস্ত্র করা হয় ), অস্ত্র ক্ষতি না করে অতিক্রম করে। জয়ের আকাঙ্ক্ষায় দুর্যোধন পুনরায় অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করলে, অশ্বত্থামা বলেন অস্ত্রটি যদি আবার ব্যবহার করা হয় তবে এটি তার ব্যবহারকারীর প্রতিই ধাবিত হবে। |
|||
গল্পের কিছু সংস্করণে, যেমন [[নীলকণ্ঠ চতুর্ধর|নীলকন্ঠ চতুর্ধর]] সংস্করণে, নারায়ণাস্ত্র পাণ্ডব বাহিনীর এক [[অক্ষৌহিণী]] সৈন্য ধ্বংস করে। নারায়ণাস্ত্র ব্যবহারের পরে উভয় বাহিনীর মধ্যে একটি ভয়ানক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তাঁর [[নারায়ণাস্ত্র]] পাণ্ডবদের হত্যা করতে ব্যর্থ হতে দেখে, অশ্বত্থামা [[হিন্দু পৌরাণিক অস্ত্র|অগ্নেয়াস্ত্রকে]] আহ্বান করেন এবং সমস্ত দৃশ্যমান ও অদৃশ্য শত্রুদের প্রতি তা নিক্ষেপ করেন। অস্ত্রটি শীঘ্রই [[অর্জুন|অর্জুনকে]] পরাভূত করে, বেশ কয়েকটি জ্বলন্ত তীর দ্বারা বেষ্টন করে এবং পাণ্ডব সেনাবাহিনীর মধ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে এবং পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করার পর, [[অর্জুন]] অগ্নেয়াস্ত্রের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করতে তার [[বরুণাস্ত্র]] ব্যবহার করেন, কিন্তু ততক্ষণে এটি পাণ্ডব বাহিনীর আরেকটি [[অক্ষৌহিণী|অক্ষৌহিনীকে]] সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়, যেখানে শুধুমাত্র [[অর্জুন]] এবং [[কৃষ্ণ]] বেঁচে থাকে। এটি দর্শন করে অশ্বত্থামা বিস্মিত হয়। তিনি বিভ্রান্ত হন এবং তার জ্ঞান-দক্ষতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেন। পরে, অশ্বত্থামা সরাসরি যুদ্ধে ধৃষ্টদ্যুম্নকে পরাজিত করেন কিন্তু [[সাত্যকি]] এবং [[ভীম]] অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় তার পশ্চাদপসরণ ঢেকে দেওয়ায় তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হন। অশ্বত্থামা উভয় যোদ্ধাকে পরাজিত করেন এবং তাদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকেও পিছু হটতে বাধ্য করেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Mahabharata, Book 7: Drona Parva: Drona-vadha Parva: Section CCI|ইউআরএল=https://www.sacred-texts.com/hin/m07/m07197.htm|সংগ্রহের-তারিখ=2022-12-24|ওয়েবসাইট=www.sacred-texts.com}}</ref> |
|||
একটি সাধারণ অথচ শক্তিশালী ধনুক ব্যবহার করে অশ্বত্থামা একবারে লক্ষ লক্ষ তীর নিক্ষেপ করেন, যা দেখে [[অর্জুন]] নিজেই হতবাক হয়ে যান। অশ্বত্থামা পুনরায় [[অর্জুন|অর্জুনকে]] পরাভূত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অর্জুন তাকে পরাজিত করেন এবং তার শরীরে বেশ কয়েকটি তীর বিদ্ধ করেন যা তাকে অজ্ঞান করে দেয় এবং সারথি অশ্বত্থামাকে অর্জুনের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যায়। পাণ্ড্য রাজ্যের রাজা মলয়ধ্বজ, পান্ডবদের অন্যতম শক্তিশালী যোদ্ধা, অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। তাদের মধ্যে দীর্ঘ ধনুর্যুদ্ধের পর, অশ্বত্থামা মলয়ধ্বজকে অস্ত্রহীন করে দেন এবং ঘটনাস্থলেই তাকে হত্যা করার সুযোগ পান, কিন্তু তিনি তাকে আরও যুদ্ধের জন্য সাময়িকভাবে রেহাই দেন। মলয়ধ্বজ তারপর একটি হাতির উপর অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে এগিয়ে যান এবং একটি শক্তিশালী ভল্ল নিক্ষেপ করেন যা অশ্বত্থামার মুকুট ধ্বংস করে দেয়। অশ্বথামা মলয়ধ্বজের শিরশ্ছেদ করেন, তার অস্ত্র কেটে দেন এবং মলয়ধ্বজের ছয় অনুসারীকেও হত্যা করেন। তা দেখে কৌরব বাহিনীর সমস্ত মহান যোদ্ধা অশ্বত্থামার এই কাজের জন্য সাধুবাদ জানালেন। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Mahabharata, Book 8: Karna Parva Index|ইউআরএল=https://www.sacred-texts.com/hin/m08/index.htm|সংগ্রহের-তারিখ=2022-12-24|ওয়েবসাইট=www.sacred-texts.com}}</ref> |
|||
== শেষ জীবনে অশ্বত্থামা == |
== শেষ জীবনে অশ্বত্থামা == |
||
[[ |
[[দুঃশাসন|দুঃশাসনের]] ভয়ানক মৃত্যুর পর, অশ্বত্থামা [[হস্তিনাপুর|হস্তিনাপুরের]] কল্যাণের কথা মাথায় রেখে দুর্যোধনকে পাণ্ডবদের সাথে শান্তি স্থাপনের পরামর্শ দেন। পরে দুর্যোধন [[ভীম|ভীমের]] দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পর, কৌরব পক্ষ থেকে বেঁচে থাকা শেষ তিনজন অশ্বত্থামা, [[কৃপাচার্য|কৃপ]] এবং [[কৃতবর্মা]] তার পাশে ছুটে আসেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে যখন দুর্যোধনসহ কৌরবদের সবাই মারা যায় তখন শেষ সময়ে এসে অশ্বত্থামা দুর্যোধনকে বলেন কি করলে দুর্যোধন মৃত্যু কালে খুশিতে মৃত্যুবরণ করতে পারবেন। আর তার উত্তরে দুর্যোধন বলেন তিনি পাণ্ডবদের বংশকে নিশ্চিহ্ন দেখতে চান। অশ্বত্থামা দুর্যোধনের হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নেন, এবং দিনের পূর্বে শল্য নিহত হওয়ার পর দুর্যোধন তাকে সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। তার মিত্রের কথা রক্ষার জন্য অশ্বত্থামা সাথে সাথে পাণ্ডবদের শিবিরে গমন করেন। তার সাথে ছিলেন কৌরবপক্ষীয় জীবিত আর দুইজন, কৃপাচার্য ও [[কৃতবর্মা]]। রাত্রে অশ্বত্থামা দেখেন গাছের ডালে কাকের বাসাকে প্যাঁচা আক্রমণ করছে। তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় পাণ্ডবদের হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। কৃপ আর কৃত এই নীচ কাজে আপত্তি জানালেও অশ্বত্থামা শুনলেন না। আর কোন উপায় না থাকায় অবশেষে তারা অশ্বত্থামার সাথে পান্ডবদের শিবির আক্রমণ করতে রাজি হলেন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা একসাথে শিবিরের দিকে যেতে শুরু করলেন। যখন অশ্বত্থামা সেখানে পৌঁছান তখন তিনি ভগবান [[শিব]] এর মুখোমুখি হন যিনি পাণ্ডবদের শিবিরের পাহারা দিচ্ছিলেন একটি ভয়ঙ্কর ভূতের রূপ গ্রহণ করে, তাকে চিনতে না পেরে অশ্বত্থামা নির্ভয়ে তার সমস্ত শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে সেই ভয়ঙ্কর ভূতটিকে আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন কিন্তু তার সামান্য ক্ষতিও করতে অক্ষম হন। এর পরে অশ্বত্থামা আগুনের গর্তে বসে ভগবান [[শিব]] এর ধ্যান করতে শুরু করেন এবং অবশেষে তাকে মুগ্ধ করে তুলেন যার পরে ভগবান শিব তার আসল রূপে অশ্বত্থামার সামনে উপস্থিত হন এবং তাকে একটি ঐশ্বরিক তলোয়ার প্রদান করেন এবং স্বয়ং অশ্বত্থামার দেহে প্রবেশ করে তাকে সম্পূর্ণরূপে অপ্রতিরোধ্য করে তোলেন। |
||
এরপর অশ্বত্থামা শিবিরে প্রবেশ করেন, শিবিরে গিয়ে ধৃষ্টদ্যুম্নকে দেখা মাত্র তাকে হত্যা করেন অশ্বত্থামা। অশ্বত্থামা প্রথমে পাণ্ডব সেনাপতি এবং তার পিতার হত্যাকারী [[ধৃষ্টদ্যুম্ন|ধৃষ্টদ্যুম্নকে]] লাথি মেরে জাগিয়ে তোলেন। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Mahabharata, Book 10: Sauptika Parva: Section 8|ইউআরএল=https://sacred-texts.com/hin/m10/m10008.htm}}</ref> অশ্বত্থামা অর্ধ-জাগ্রত ধৃষ্টদ্যুম্নকে প্রহার করেন এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। ধৃষ্টদুম্ন্য তার হাতের তলোয়ারের আঘাতে মারা যেতে চান, শেষ পর্যন্ত অশ্বত্থামা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারপরে অশ্বত্থামা [[শিখণ্ডী]], [[উত্তমৌজ এবং যুধামন্যু|উত্তমৌজ, যুধামন্যু]], [[উপপাণ্ডব]] (তাদেরকে পাণ্ডব বলে মনে করে) এবং পাণ্ডব বাহিনীর অন্যান্য অনেক বিশিষ্ট যোদ্ধা সহ অবশিষ্ট যোদ্ধাদের হত্যা করে। বেশিরভাগ যোদ্ধা এমনকি ফিরে লড়াই করেছিলেন তবে অশ্বত্থামা এগারো জন [[রুদ্র|রুদ্রের]] একজন হিসাবে তাঁর সক্রিয় দক্ষতার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ছিলেন না। যারা অশ্বত্থামার ক্রোধ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল তাদের শিবিরের প্রবেশদ্বারে [[কৃপাচার্য|কৃপ]] ও [[কৃতবর্মা]] কুপিয়ে হত্যা করে। |
|||
এরপর অশ্বত্থামা শিবিরে প্রবেশ করেন, শিবিরে গিয়ে ধৃষ্টদ্যুম্নকে দেখা মাত্র তাকে হত্যা করেন অশ্বত্থামা। তারপরে অশ্বত্থামা দ্রৌপদীর পাঁচ পুত্রকে, [[শিখণ্ডী]] ও অন্যান্য পাণ্ডব বীরদের হত্যা করেন। বেশিরভাগ যোদ্ধা এমনকি ফিরে লড়াই করেছিলেন তবে অশ্বত্থামা এগারো জন [[রুদ্র|রুদ্রের]] একজন হিসাবে তাঁর সক্রিয় দক্ষতার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ছিলেন না। উল্লেখ্য, এই সময় পঞ্চপাণ্ডব, কৃষ্ণ গঙ্গাতীরে অবস্থান করছিলেন। হৃদয় বিদারক খবরটি পেয়ে শিবিরে ফিরে আসার পর পুত্রশোকাহত দ্রৌপদীকে শান্ত করতে তাকে যেকোনো প্রকারে বধ করতে যান অর্জুন। তাদের দেখে অশ্বত্থামা শক্তিশালী [[ব্রহ্মাশিরাস্ত্র|ব্রহ্মশির]] অস্ত্র প্রয়োগ করলে অর্জুন বাধ্য হন ব্রহ্মশির দিয়ে [[ব্রহ্মাশিরাস্ত্র|ব্রহ্মশির]] প্রতিরোধ করতে। বেদব্যাসের মধ্যস্থতায় বিপর্যয় নিবৃত্ত হয় কিন্তু অস্ত্র গিয়ে উত্তরার গর্ভে থাকা সন্তানের উপর পড়ে। |
|||
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তিন যোদ্ধা দুর্যোধনকে খুঁজতে যায়। তার কাছে সমস্ত [[পাঞ্চাল|পাঞ্চালদের]] মৃত্যুর খবর জানানোর পরে, তারা ঘোষণা করে যে পাণ্ডবরা আর নেই। দুর্যোধন তার কথা বিশ্বাস করে না এবং তার কাছে ভীমের মাথা দাবি করে দুর্যোধনকে সে ভীমের পুত্রের মাথা দেয়। দুর্যোধন রাগের বশবর্তী হয়ে এটিকে ঘুষি মারেন যা তাকে নিশ্চিত করে যে এটি ভীমের মাথা ছিল না। তিনি অশ্বত্থামাকে তার মূর্খতার জন্য তিরস্কার করেন এবং শোকে কাঁদেন যে তিনি তার বংশের শেষ উত্তরাধিকারীদের নির্মূল করেছেন। এর মাধ্যমে, দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে সতর্ক করার আগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন যে অর্জুন অবশ্যই তাঁর পতনের জন্য আসবেন এবং পরের দিন সকালে কৌরব সৈন্যবাহিনীর বাকি তিন যোদ্ধা মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। |
|||
[[চিত্র:Asvattama_was_arrested_and_brought_to_Draupadi_by_Arjuna.jpg|বাম|থাম্ব|অশ্বত্থামা ধৃত হন এবং [[অর্জুন]] তাকে [[দ্রৌপদী|দ্রৌপদীর]] কাছে নিয়ে আসেন।]] |
|||
উল্লেখ্য, এই সময় পঞ্চপাণ্ডব, কৃষ্ণ গঙ্গাতীরে অবস্থান করছিলেন। এদিকে ধৃষ্ট্যদ্যুম্নের সারথি কোন এক ফাঁকে শিবির থেকে পালিয়ে এসে এই মর্মান্তিক ঘটনার বিবরণ পাণ্ডবদের জানায়।এসব ঘটনার খবর শুনে যুধিষ্ঠির অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং পাণ্ডবরা অসহায় হয়ে পড়ে। ভীম ক্রুদ্ধ হয়ে দ্রোণপুত্রকে হত্যা করতে ছুটে যান। হৃদয় বিদারক খবরটি পেয়ে শিবিরে ফিরে আসার পর পুত্রশোকাহত দ্রৌপদীকে শান্ত করতে তাকে যেকোনো প্রকারে বধ করতে যান অর্জুন। তারা তাকে [[গঙ্গা নদী|গঙ্গার]] তীরে ঋষি [[বেদব্যাস|ব্যাসের]] আশ্রমে খুঁজে পায়। এখনও জীবিত পাণ্ডবদের দেখে উদ্দীপ্ত অশ্বত্থামা তাদের হত্যার প্রতিজ্ঞা পূরণের জন্য ঘাসের একটি ছোট ফলক থেকে পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে [[ব্রহ্মাশিরাস্ত্র|ব্রহ্মশিরাস্ত্রকে]] আহ্বান জানায়। কৃষ্ণ [[অর্জুন|অর্জুনকে]] আত্মরক্ষার জন্য অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে তার নিজের ব্রহ্মশিরাস্ত্রে অগ্নিসংযোগ করতে বলেন। বেদব্যাসের মধ্যস্থতায় বিপর্যয় নিবৃত্ত হয়। ব্যাস নিজ যোগশক্তির দ্বারা ধ্বংসাত্মক অস্ত্রগুলিকে একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে বাধা দেন। তিনি অর্জুন এবং অশ্বত্থামা উভয়কেই তাদের অস্ত্র ফিরিয়ে নিতে বলেন। অর্জুন কীভাবে তা করতে হয় তা জেনে তা ফিরিয়ে নেয়। |
|||
অশ্বত্থামা অবশ্য জানতেন না কীভাবে (দ্রোণ তাকে শেখাননি কীভাবে ব্রহ্মশির অস্ত্রটি ফিরিয়ে নেওয়া যায় কারণ তিনি জানতেন যে তিনি অর্জুনের মতো ধৈর্যশীল এবং সক্ষম নন এবং অবশ্যই এটি নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করবেন, তাই তিনি এই অস্ত্র ব্যবহার করার ক্ষমতা হ্রাস করেছিলেন। শুধুমাত্র একবার তাকে কীভাবে ডাকতে হয় তা শিখিয়ে দিয়েছিলেন) এই অস্ত্র নিবৃত্ত করতে হয়। পাণ্ডববংশের নাশ করার প্রয়াসে অশ্বত্থামা ব্রহ্মাস্ত্রকে গর্ভবতী [[উত্তরা (মহাভারত)|উত্তরার]] গর্ভের দিকে পুনঃনির্দেশিত করে। কিন্তু অস্ত্র গিয়ে উত্তরার গর্ভে থাকা সন্তানের উপর পড়ে। দ্রৌপদী, সুভদ্রা এবং সুদেষ্ণার অনুরোধে কৃষ্ণ উত্তরার অনাগত সন্তানকে ব্রহ্মশিরাস্ত্রের প্রভাব থেকে রক্ষা করেন। তখন অশ্বত্থামাকে তার কপালে রত্নটি সমর্পণ করতে বাধ্য করা হয়। |
|||
== অশ্বত্থামার শাস্তি == |
== অশ্বত্থামার শাস্তি == |
||
অশ্বত্থামার এই পাপকর্মের কারণে শ্রীকৃষ্ণ অশ্বত্থামাকে ৩০০০ বছর ধরে দুঃখভোগের অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন যে, তুমি যেভাবে তোমার পাপকর্মের দ্বারা দ্রৌপদীর এবং উত্তরার প্রেমকে চিরকালের জন্য দুঃখিত করেছ, ঠিক একইভাবে তোমার এই অমূল্য রত্নটির ব্যত্যয় তুমিও ভোগ করবে। ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকবে,মৃত্যু চাইবে কিন্তু মরবে না। শারীরিক এবং মানসিক আঘাত সহ্য করে অন্যদের যে যন্ত্রণা দিয়েছেন তা অনুভব করতে সক্ষম হবে এবং কখনও শান্তি পাবে না, এর পরেই অশ্বত্থামা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।<ref>যুদ্ধশেষ</ref> |
অশ্বত্থামার এই পাপকর্মের কারণে শ্রীকৃষ্ণ অশ্বত্থামাকে ৩০০০ বছর ধরে দুঃখভোগের অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন যে, তুমি যেভাবে তোমার পাপকর্মের দ্বারা দ্রৌপদীর এবং উত্তরার প্রেমকে চিরকালের জন্য দুঃখিত করেছ, ঠিক একইভাবে তোমার এই অমূল্য রত্নটির ব্যত্যয় তুমিও ভোগ করবে। আঘাতের রক্ত এবং পুঁজ নিয়ে বনে ঘুরে বেড়াবে। ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকবে,মৃত্যু চাইবে কিন্তু মরবে না। শারীরিক এবং মানসিক আঘাত সহ্য করে অন্যদের যে যন্ত্রণা দিয়েছেন তা অনুভব করতে সক্ষম হবে এবং কখনও শান্তি পাবে না, এর পরেই অশ্বত্থামা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। <ref>যুদ্ধশেষ</ref> অশ্বত্থামা তখন বনে চলে যান যাতে আর দেখা না হয়। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=NxJoCgAAQBAJ&pg=PT16|শিরোনাম=Srimad Bhagwat Puran|শেষাংশ=Chaturvedi|প্রথমাংশ=B. K.|তারিখ=2020|প্রকাশক=Diamond Pocket Books Pvt Ltd|পাতাসমূহ=16|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-81-288-2252-0}}</ref> পবিত্র স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, পরে ঋষি বেদব্যাসের পরামর্শে, অশ্বত্থামা বহু বছর ধরে ভগবান শিবের কঠোর তপস্যা করেন এবং তাঁর ভক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অবশেষে ভগবান [[শিব]] অশ্বত্থামাকে শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেন। এবং এটিও বলা হয় যে এই মুহুর্তটিই ছিল যখন অশ্বত্থামা শিবের আশীর্বাদে অমর হয়েছিলেন। |
||
== বংশ == |
|||
পবিত্র স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, পরে ঋষি বেদব্যাসের পরামর্শে, অশ্বত্থামা বহু বছর ধরে ভগবান শিবের কঠোর তপস্যা করেন এবং তাঁর ভক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অবশেষে ভগবান [[শিব]] অশ্বত্থামাকে শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেন। এবং এটিও বলা হয় যে এই মুহুর্তটিই ছিল যখন অশ্বত্থামা শিবের আশীর্বাদে অমর হয়েছিলেন। |
|||
ইতিহাসবিদ আর. সাথিয়ানথায়ার এবং ডি. সি. সিরকার একটি তত্ত্ব প্রস্তাব করেছেন, যার সমর্থন করেছেন হারমান কুলকে, ডায়েটমার রদারমুন্ড এবং বার্টন স্টেইন। সিরকার উল্লেখ করেছেন, [[পল্লব সাম্রাজ্য|পল্লবদের]] পারিবারিক কিংবদন্তিগুলি অশ্বত্থামা থেকে একজন পূর্বপুরুষ এবং একজন নাগ রাজকুমারীর সাথে তার মিলনের কথা বর্ণনা করে। এই মিলন থেকে যে পুত্রের জন্ম হয়েছিল, তিনিই এই রাজবংশের সূচনা করেছিলেন। দাবিটি এই সত্যকে সমর্থন করে যে [[কাঞ্চীপুরম|কাঞ্চিপুরমে]] পল্লবরা বাস করতেন এবং এটি পূর্বে ''নাগ রাজ্যের'' একটি অংশ ছিল। |
|||
আরও একটি প্রমাণ হল পালাভ মারাঠা পরিবারের [[গোত্র (হিন্দুধর্ম)|গোত্র]] হল [[ভরদ্বাজ মুনি|ভরদ্বাজ]] (অশ্বত্থামার পিতামহ), যা পল্লবরা তাদের নথিতে নিজেদের বলে দাবি করেছে। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.16652|শিরোনাম=History Of Medieval Hindu India|শেষাংশ=Vaidya C. V.|তারিখ=1921|পাতা=281}}</ref> |
|||
[[তিরুবনন্তপুরম|তিরুবনন্তপুরমের]] বিখ্যাত [[পদ্মনাভস্বামী মন্দির|অনন্তপদ্মনাভস্বামী]] মন্দিরে অশ্বত্থামার একটি মন্দির রয়েছে। |
|||
== সাহিত্য == |
== সাহিত্য == |
||
৪৮ নং লাইন: | ৮০ নং লাইন: | ||
জীবেদ্বর্ষশতং প্রাজ্ঞঃ অপমৃত্যুবিবর্জিতঃ {{!}}{{!}}<br>|title=সপ্ত চিরঞ্জীবি স্তোত্রম্}} |
জীবেদ্বর্ষশতং প্রাজ্ঞঃ অপমৃত্যুবিবর্জিতঃ {{!}}{{!}}<br>|title=সপ্ত চিরঞ্জীবি স্তোত্রম্}} |
||
মন্ত্রটি বলে যে আটজন অমর (অশ্বত্থামা, [[মহাবলী (দৈত্য রাজা)|মহাবলী]], [[বেদব্যাস|ব্যাস]], [[হনুমান (রামায়ণ)|হনুমান]], [[বিভীষণ]], [[কৃপাচার্য|কৃপ]], [[পরশুরাম]] এবং [[মার্কণ্ডেয়]]) ব্যক্তির যে নিত্য স্মরণ করে, সে অসুস্থতা এবং স্বল্পায়ু থেকে মুক্তি পেতে পারে। |
মন্ত্রটি বলে যে আটজন অমর (অশ্বত্থামা, [[মহাবলী (দৈত্য রাজা)|মহাবলী]], [[বেদব্যাস|ব্যাস]], [[হনুমান (রামায়ণ)|হনুমান]], [[বিভীষণ]], [[কৃপাচার্য|কৃপ]], [[পরশুরাম]] এবং [[মার্কণ্ডেয়]]) ব্যক্তির যে নিত্য স্মরণ করে, সে অসুস্থতা এবং স্বল্পায়ু থেকে মুক্তি পেতে পারে। |
||
== ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে অশ্বত্থামার ভূমিকা == |
|||
{{প্রধান|ব্যাস (উপাধি)}} |
|||
পরশুরাম, ঋষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস এবং কৃপাচার্যের সাথে অশ্বত্থামাকে কলিযুগে ঋষিদের মধ্যে অগ্রগণ্য বলে মনে করা হয়।<ref>K M Ganguly (1883-1896). [http://www.sacred-texts.com/hin/m13/m13b115.htm The Mahabharata, Book 13 Anusasana Parva, SECTION CL] sacred-texts.com, October 2003, Retrieved 2014-02-11</ref> অশ্বত্থামা পরবর্তী ঋষি ব্যাস হয়ে উঠবেন, যিনি বর্তমান ৭ম মন্বন্তরের ২৯ তম মহাযুগে বা যুগচক্রে বেদকে ভাগ করবেন। অশ্বত্থামা ঋষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস, কৃপ এবং পরশুরামের সাথে [[সাবর্ণি মনু|অষ্টম মন্বন্তরে]] সপ্তর্ষিদের একজন হয়ে উঠবেন।<ref>বিষ্ণু পুরাণ। তৃতীয় অংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়</ref> |
|||
== জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে == |
|||
* ''শ্রী কৃষ্ণ সত্যে'' এম. প্রভাকর রেড্ডি অশ্বত্থামার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। |
|||
* [[মহাভারত (১৯৮৮ টিভি ধারাবাহিক)|১৯৮৮ ''সালের মহাভারত টিভি সিরিজে'']], প্রদীপ রাওয়াত অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। |
|||
* কৃষ্ণ-এ, মুকুল নাগ অশ্বত্থামাকে চিত্রিত করেছিলেন। |
|||
* [[মহাভারত (২০১৩-এর টিভি ধারাবাহিক)|২০১৩ ''সালের মহাভারত টিভি সিরিজে'']], অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন [[অঙ্কিত মোহন]]। |
|||
* টিভি সিরিজ ''সূর্যপুত্র কর্ণ'' -এ [[কুণাল বক্সী|কুনাল বক্সী]] অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। |
|||
* ''ধর্মক্ষেত্রে'', অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সৌরভ গয়াল। |
|||
* ''কুরুক্ষেত্রে'', অশ্বত্থামাকে ভারত গৌড়া চিত্রিত করেছিলেন। |
|||
* ''এক অর মহাভারতে'', অশ্বথামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অশোক লোখান্ডে। |
|||
* ''[[কল্কি ২৮৯৮ এডি|কল্কি ২৮৯৮ এ.ডি]]'' -এ অশ্বথামা চরিত্রে অভিনয় করেছেন [[অমিতাভ বচ্চন]]। |
|||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
||
৫৩ নং লাইন: | ১০২ নং লাইন: | ||
== বহিঃসংযোগ == |
== বহিঃসংযোগ == |
||
{{ |
{{কমন্স বিষয়শ্রেণী|Ashwatthama}} |
||
'''Original text online {{in lang|sa}}''' |
'''Original text online {{in lang|sa}}''' |
||
* [https://web.archive.org/web/20090724075838/http://www.sub.uni-goettingen.de/ebene_1/fiindolo/gret_utf.htm#MBh#MBh GRETIL etext] (Muneo Tokunaga) |
* [https://web.archive.org/web/20090724075838/http://www.sub.uni-goettingen.de/ebene_1/fiindolo/gret_utf.htm#MBh#MBh GRETIL etext] (Muneo Tokunaga) |
||
* [https://web.archive.org/web/20101107222102/http://www.sub.uni-goettingen.de/ebene_1/fiindolo/gretil/1_sanskr/2_epic/mbh/sas/mahabharata.htm ''Mahābhārata'' online] |
* [https://web.archive.org/web/20101107222102/http://www.sub.uni-goettingen.de/ebene_1/fiindolo/gretil/1_sanskr/2_epic/mbh/sas/mahabharata.htm ''Mahābhārata'' online] |
||
* [http://haribhakt.com/aswathama-existed-ashwathama-seen-by-people-ashwathama-is-alive/ History: Encounters with Ashvatthama] {{ওয়েব আর্কাইভ| |
* [http://haribhakt.com/aswathama-existed-ashwathama-seen-by-people-ashwathama-is-alive/ History: Encounters with Ashvatthama] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20150509032832/http://haribhakt.com/aswathama-existed-ashwathama-seen-by-people-ashwathama-is-alive |তারিখ=৯ মে ২০১৫ }} |
||
{{Mahabharata}}{{Hindu Culture and Epics}}{{ |
{{Mahabharata}}{{Hindu Culture and Epics}}{{কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ}} |
||
[[বিষয়শ্রেণী:মহাভারতের চরিত্র]] |
[[বিষয়শ্রেণী:মহাভারতের চরিত্র]] |
১৭:০৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
অশ্বত্থামা | |
---|---|
পূর্ণ নাম | দ্রৌণি (জন্ম নাম) |
অস্ত্র | তীর-ধনুক, তলোয়ার |
পরিবার |
|
আত্মীয় | কৃপাচার্য (মামা) ভরদ্বাজ (পিতামহ) |
অশ্বত্থামা (সংস্কৃত:अश्वत्थामा) হল গুরু দ্রোণাচার্য ও কুলগুরু কৃপাচার্যের বোন কৃপির পুত্র। তিনি ছিলেন মহাভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি ঋষি ভরদ্বাজের নাতি ছিলেন। অশ্বত্থামা হস্তিনাপুরের শাসকদের অধীনস্থ হয়ে অহিছত্রকে রাজধানী করে পাঞ্চালার উত্তরাঞ্চল শাসন করেছিলেন। তিনি ছিলেন মহারথী,[১] যিনি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে কৌরবের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। ভগবান শিব দ্বারা আশীর্বাদ পেয়ে তিনি চিরঞ্জীবী (অমর) হয়েছিলেন। অশ্বত্থামার কথিত মৃত্যুর প্রতারণামূলক চক্রান্ত তার শোকার্ত পিতা দ্রোণকে বধ করা হয়। তিনি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবদের চূড়ান্ত তথা সর্বশেষ সেনাপতি নিযুক্ত হন। শোক ও ক্রোধে কাবু হয়ে তিনি এক রাতের আক্রমণে পাণ্ডব শিবিরে উপস্থিত সমস্ত যোদ্ধাদের বধ করেন। তিনি মহাভারতের সবচেয়ে বিশিষ্ট যোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন। মহাভারতের অংশাবতরণাধ্যায় অনুসারে, মহাদেব, যম, কাম, ক্রোধের মিলিত অংশে অশ্বত্থামা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার নেত্রযুগল ছিল পদ্ম-পলাশের মতো। [২]
জন্ম
[সম্পাদনা]অশ্বত্থামা এর পিতার নাম গুরু দ্রোণ আর তার মাতার নাম কৃপী। তিনি একটি বনের গুহায় জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমানে তপকেশ্বর মহাদেব মন্দির, দেরাদুন। উত্তরাখণ্ড)। দ্রোণ ভগবান শিবকে সন্তুষ্ট করার জন্য বহু বছর ধরে কঠোর তপস্যা করেন যাতে ভগবান শিবের মতো পরাক্রমশালী পুত্র লাভ করেন। অশ্বত্থামা তার কপালে একটি মূল্যবান এবং শক্তিশালী রত্ন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন প্রভু শিব এর আশীর্বাদ হিসাবে যা তাকে মানুষের চেয়ে নীচের সমস্ত জীবের উপর ক্ষমতা দেয়; এটি তাকে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি, বার্ধক্য এবং সকল প্রকার রোগ, অস্ত্র এবং দেবতাদের থেকে রক্ষা করে। ঐশ্বরিক রত্নটি প্রায় অশ্বত্থামাকে অজেয় এবং অমর করে তোলে। জন্মের সময় অশ্বত্থামা অশ্বের হ্রেষার মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরূপ নামকরণ করা হয়। দ্রোণ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হলেও সামান্য অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ে সরল জীবনযাপন করতেন। ফলস্বরূপ, অশ্বত্থামা এক কঠিন শৈশব অতিবাহিত করে, এমনকি তার পরিবার দুধের খরচও বহন করতে সক্ষম ছিল না। পরিবারকে একটি উন্নত জীবন প্রদান করতে, দ্রোণ তার প্রাক্তন সহপাঠী এবং বন্ধু, দ্রুপদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পাঞ্চাল রাজ্যে যান, যিনি দ্রোণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি যখন রাজা হবেন, তখন তার রাজ্যের অর্ধেক তার সাথে ভাগ করে নেবেন। যাইহোক, দ্রুপদ তাদের বন্ধুত্বকে অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন যে একজন রাজা এবং একজন ভিক্ষুক বন্ধু হতে পারে না। এই বলে দ্রুপদ দ্রোণকে অপমান করে।
এই ঘটনার পর এবং দ্রোণের দুর্দশা দেখে কৃপ দ্রোণকে হস্তিনাপুরে আমন্ত্রণ জানায়। এইভাবে, দ্রোণ পাণ্ডব এবং কৌরব উভয়েরই গুরু হন। তাদের সাথে অশ্বত্থামাকেও অস্ত্রবিদ্যায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। [১]
যুদ্ধ শিক্ষা
[সম্পাদনা]অশ্বত্থামার পিতা গুরু দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণ হয়েও তিনি ক্ষত্রিয়ের মতো যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি তার যুদ্ধ শিক্ষা শেখেন তার পিতা ভরদ্বাজ মুনির কাছ থেকে। তার পিতার দেওয়া শিক্ষাই তিনি তার ছাত্রদের শেখাতেন। যারা ব্রাহ্মণ কুলে জন্মগ্রহণ করে একই সাথে ব্রাহ্মণ্য এবং ক্ষাত্রধর্ম পালন করে, তাদের ব্রহ্মক্ষত্রিয় বলা হয়। এজন্য পরশুরামের মত অশ্বত্থামা, কৃপাচার্য এবং দ্রোণাচার্য তাদেরও ব্রহ্মক্ষত্রিয় বলা হয়। এদিকে তার বাল্যকালের মিত্র রাজা দ্রুপদের কাছে গেলে তিনি গুরু দ্রোণকে অপমান করেন। আর সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে তিনি হস্তিনাপুরে এসে তার যোগ্য শিষ্য খুঁজতে থাকেন। সেখানে তিনি কৌরব কুমারদের সাথে তার একমাত্র পুত্র অশ্বত্থামাকে যুদ্ধ শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন। গুরু দ্রোণ দেখতে পেলেন সেখানে ধনুর্বিদ্যাতে অর্জুন বিশেষ দক্ষতা অর্জন করছে, তাই তিনি তার পুত্র অশ্বত্থামাকে সেরা ধনুর্বিদ হবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন। অশ্বত্থামা বহু গুপ্ত ঐশ্বরিক অস্ত্র প্রয়োগের কৌশল এবং বিদ্যা পিতার কাছ থেকে শিখেছিলেন। [৩][৪]
রাজকুমারদের সাথে অশ্বত্থামার থাকাকালীন, দুর্যোধন ঘোড়ার প্রতি অশ্বত্থামার অনুরাগ দেখেন এবং তাকে একটি ভাল জাতের ঘোড়া উপহার দেন। বিনিময়ে, দুর্যোধন হস্তিনাপুরের প্রতি দ্রোণের কর্তব্য-নির্ভর আনুগত্য ছাড়াও নিজের প্রতি এবং বর্ধিতভাবে কৌরবদের প্রতি অশ্বত্থামার ব্যক্তিগত আনুগত্য লাভ করেন।
যখন দ্রোণ তাঁর শিষ্যদের দ্রুপদকে বন্দী করার অনুরোধ জ্ঞাপন করে নিজ দক্ষিণা দিতে বলেন, কৌরবরা ব্যর্থ হন, তখন পাণ্ডবরা দ্রুপদকে পরাজিত করেন এবং তাঁকে দ্রোণের সামনে হাজির করেন। দ্রোণ দ্রুপদের উত্তরদিকস্থ অর্ধেক রাজ্য অধিকার করেন এবং অশ্বত্থামাকে রাজা হিসাবে রাজমুকুট প্রদান করেন, যার রাজধানী অহিচ্ছত্রে ছিল।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ও অশ্বত্থামা
[সম্পাদনা]কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ অশ্বত্থামা কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেন। আর তার পিতা গুরু দ্রোণ তার ছেলে অশ্বত্থামার স্নেহের কারণে কৌরবদের পক্ষে থাকেন। এই কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে অশ্বত্থামার বিশেষ অবদান রয়েছে। তিনি পাণ্ডবদের বহু সেনা হত্যা করেন। তাকে বধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
যুদ্ধের ১৪ তম দিবসে, তিনি অঞ্জনপর্বা ( ঘটোৎকচের শক্তিশালী পুত্র) সহ রাক্ষসদের একটি দলকে বধ করেন এবং ঘটোৎকচকেও পরাজিত করেন, কিন্তু তার মায়া মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হন। তিনি জয়দ্রথের কাছে পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বেশ কয়েকবার অর্জুনের বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু পরাজিত হন এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন। জয়দ্রথকে রক্ষা করার পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন, অশ্বত্থামা, এক সময়ে তার সর্বাস্ত্র বাণ ব্যবহার করেন এবং দুর্যোধনের প্রতি ক্রুদ্ধ অর্জুন কর্তৃক প্রবর্তিত শক্তিশালী মানবাস্ত্র বাণটি ধ্বংস করে দুর্যোধনের ঐশ্বরিক স্বর্গীয় বর্ম এবং জীবন সফলভাবে রক্ষা করেন।
যুদ্ধের দশম দিনে, ভীষ্মের পতনের পর, দ্রোণ কৌরব সৈন্যবাহিনীর সর্বোচ্চ সেনাপতি হন। তিনি দুর্যোধনকে প্রতিশ্রুতি দেন যে যুধিষ্ঠিরকে বন্দী করবেন, কিন্তু তিনি বারবার তা করতে ব্যর্থ হন। দুর্যোধন তাকে কটূক্তি করে এবং অপমান করে, যা অশ্বত্থামাকে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ করে, যার ফলে অশ্বত্থামা এবং দুর্যোধনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে দ্রোণাচার্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলে দ্রোণকে বধ করার জন্য পাণ্ডবগণ শ্রীকৃষ্ণের সাথে পরামর্শ করেন। কৃষ্ণ জানতেন সশস্ত্র দ্রোণকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। তখন শ্রীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের বলেন কোন ভাবে যদি গুরু দ্রোণের কানে অশ্বত্থামার মৃত্যুর খবর পোঁছানো যায় তাহলে সে সময় ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে হত্যা করবে। শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শ মতো ভীম পাণ্ডবপক্ষের ইন্দ্রবর্মার অশ্বত্থামা নামক হাতিকে হত্যা করেন এবং বলেন অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন যুধিষ্ঠির। আর একমাত্র গুরু দ্রোণ যুধিষ্ঠিরের কথাকে বিশ্বাস করবেন। তাই যুধিষ্ঠির দ্রোণের উদ্দেশ্যে 'অশ্বত্থামা হতঃ- ইতি গজ' (অশ্বত্থামা নামক হাতী নিহত হয়েছে) বাক্য উচ্চারণ করেন। ইতি গজ শব্দটি আস্তে বলাতে দ্রোণাচার্য মনে করেন যে তার পুত্র অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর দ্রোণাচার্য অস্ত্র ত্যাগ করে ব্রহ্মলোকে যাত্রার মানসে ধ্যানস্থ হন। এরপর ধৃষ্টদ্যুম্ন ধ্যানস্থ দ্রোণাচার্যকে হত্যা করেন। আর তাতে অশ্বত্থামা ভীষণ খেপে যায়। [৫]
প্রতারণামূলক উপায়ে তার পিতাকে হত্যার বৃত্তান্ত জানার পরে, অশ্বত্থামা ক্রোধে জ্বলে ওঠেন এবং পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে নারায়ণাস্ত্রের আহ্বান জানান।
যখন অস্ত্র আহ্বান করা হয়, তীব্র বাতাস বইতে শুরু করে, বজ্রধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয় এবং প্রতিটি পাণ্ডব সৈন্যের উদ্দেশ্যে তীর সৃষ্টি হয়। অস্ত্র নিরস্ত্র লোকদের উপেক্ষা করে জেনে, কৃষ্ণ সমস্ত সৈন্যকে তাদের রথ পরিত্যাগ করে নিরস্ত্র হওয়ার নির্দেশ দেন। তাদের সৈন্যদের নিরস্ত্র করার পরে ( ভীমকে অতি কষ্টে নিরস্ত্র করা হয় ), অস্ত্র ক্ষতি না করে অতিক্রম করে। জয়ের আকাঙ্ক্ষায় দুর্যোধন পুনরায় অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করলে, অশ্বত্থামা বলেন অস্ত্রটি যদি আবার ব্যবহার করা হয় তবে এটি তার ব্যবহারকারীর প্রতিই ধাবিত হবে।
গল্পের কিছু সংস্করণে, যেমন নীলকন্ঠ চতুর্ধর সংস্করণে, নারায়ণাস্ত্র পাণ্ডব বাহিনীর এক অক্ষৌহিণী সৈন্য ধ্বংস করে। নারায়ণাস্ত্র ব্যবহারের পরে উভয় বাহিনীর মধ্যে একটি ভয়ানক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তাঁর নারায়ণাস্ত্র পাণ্ডবদের হত্যা করতে ব্যর্থ হতে দেখে, অশ্বত্থামা অগ্নেয়াস্ত্রকে আহ্বান করেন এবং সমস্ত দৃশ্যমান ও অদৃশ্য শত্রুদের প্রতি তা নিক্ষেপ করেন। অস্ত্রটি শীঘ্রই অর্জুনকে পরাভূত করে, বেশ কয়েকটি জ্বলন্ত তীর দ্বারা বেষ্টন করে এবং পাণ্ডব সেনাবাহিনীর মধ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে এবং পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করার পর, অর্জুন অগ্নেয়াস্ত্রের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করতে তার বরুণাস্ত্র ব্যবহার করেন, কিন্তু ততক্ষণে এটি পাণ্ডব বাহিনীর আরেকটি অক্ষৌহিনীকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়, যেখানে শুধুমাত্র অর্জুন এবং কৃষ্ণ বেঁচে থাকে। এটি দর্শন করে অশ্বত্থামা বিস্মিত হয়। তিনি বিভ্রান্ত হন এবং তার জ্ঞান-দক্ষতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেন। পরে, অশ্বত্থামা সরাসরি যুদ্ধে ধৃষ্টদ্যুম্নকে পরাজিত করেন কিন্তু সাত্যকি এবং ভীম অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় তার পশ্চাদপসরণ ঢেকে দেওয়ায় তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হন। অশ্বত্থামা উভয় যোদ্ধাকে পরাজিত করেন এবং তাদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকেও পিছু হটতে বাধ্য করেন।[৬]
একটি সাধারণ অথচ শক্তিশালী ধনুক ব্যবহার করে অশ্বত্থামা একবারে লক্ষ লক্ষ তীর নিক্ষেপ করেন, যা দেখে অর্জুন নিজেই হতবাক হয়ে যান। অশ্বত্থামা পুনরায় অর্জুনকে পরাভূত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অর্জুন তাকে পরাজিত করেন এবং তার শরীরে বেশ কয়েকটি তীর বিদ্ধ করেন যা তাকে অজ্ঞান করে দেয় এবং সারথি অশ্বত্থামাকে অর্জুনের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যায়। পাণ্ড্য রাজ্যের রাজা মলয়ধ্বজ, পান্ডবদের অন্যতম শক্তিশালী যোদ্ধা, অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। তাদের মধ্যে দীর্ঘ ধনুর্যুদ্ধের পর, অশ্বত্থামা মলয়ধ্বজকে অস্ত্রহীন করে দেন এবং ঘটনাস্থলেই তাকে হত্যা করার সুযোগ পান, কিন্তু তিনি তাকে আরও যুদ্ধের জন্য সাময়িকভাবে রেহাই দেন। মলয়ধ্বজ তারপর একটি হাতির উপর অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে এগিয়ে যান এবং একটি শক্তিশালী ভল্ল নিক্ষেপ করেন যা অশ্বত্থামার মুকুট ধ্বংস করে দেয়। অশ্বথামা মলয়ধ্বজের শিরশ্ছেদ করেন, তার অস্ত্র কেটে দেন এবং মলয়ধ্বজের ছয় অনুসারীকেও হত্যা করেন। তা দেখে কৌরব বাহিনীর সমস্ত মহান যোদ্ধা অশ্বত্থামার এই কাজের জন্য সাধুবাদ জানালেন। [৭]
শেষ জীবনে অশ্বত্থামা
[সম্পাদনা]দুঃশাসনের ভয়ানক মৃত্যুর পর, অশ্বত্থামা হস্তিনাপুরের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে দুর্যোধনকে পাণ্ডবদের সাথে শান্তি স্থাপনের পরামর্শ দেন। পরে দুর্যোধন ভীমের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পর, কৌরব পক্ষ থেকে বেঁচে থাকা শেষ তিনজন অশ্বত্থামা, কৃপ এবং কৃতবর্মা তার পাশে ছুটে আসেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে যখন দুর্যোধনসহ কৌরবদের সবাই মারা যায় তখন শেষ সময়ে এসে অশ্বত্থামা দুর্যোধনকে বলেন কি করলে দুর্যোধন মৃত্যু কালে খুশিতে মৃত্যুবরণ করতে পারবেন। আর তার উত্তরে দুর্যোধন বলেন তিনি পাণ্ডবদের বংশকে নিশ্চিহ্ন দেখতে চান। অশ্বত্থামা দুর্যোধনের হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নেন, এবং দিনের পূর্বে শল্য নিহত হওয়ার পর দুর্যোধন তাকে সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। তার মিত্রের কথা রক্ষার জন্য অশ্বত্থামা সাথে সাথে পাণ্ডবদের শিবিরে গমন করেন। তার সাথে ছিলেন কৌরবপক্ষীয় জীবিত আর দুইজন, কৃপাচার্য ও কৃতবর্মা। রাত্রে অশ্বত্থামা দেখেন গাছের ডালে কাকের বাসাকে প্যাঁচা আক্রমণ করছে। তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় পাণ্ডবদের হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। কৃপ আর কৃত এই নীচ কাজে আপত্তি জানালেও অশ্বত্থামা শুনলেন না। আর কোন উপায় না থাকায় অবশেষে তারা অশ্বত্থামার সাথে পান্ডবদের শিবির আক্রমণ করতে রাজি হলেন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা একসাথে শিবিরের দিকে যেতে শুরু করলেন। যখন অশ্বত্থামা সেখানে পৌঁছান তখন তিনি ভগবান শিব এর মুখোমুখি হন যিনি পাণ্ডবদের শিবিরের পাহারা দিচ্ছিলেন একটি ভয়ঙ্কর ভূতের রূপ গ্রহণ করে, তাকে চিনতে না পেরে অশ্বত্থামা নির্ভয়ে তার সমস্ত শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে সেই ভয়ঙ্কর ভূতটিকে আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন কিন্তু তার সামান্য ক্ষতিও করতে অক্ষম হন। এর পরে অশ্বত্থামা আগুনের গর্তে বসে ভগবান শিব এর ধ্যান করতে শুরু করেন এবং অবশেষে তাকে মুগ্ধ করে তুলেন যার পরে ভগবান শিব তার আসল রূপে অশ্বত্থামার সামনে উপস্থিত হন এবং তাকে একটি ঐশ্বরিক তলোয়ার প্রদান করেন এবং স্বয়ং অশ্বত্থামার দেহে প্রবেশ করে তাকে সম্পূর্ণরূপে অপ্রতিরোধ্য করে তোলেন।
এরপর অশ্বত্থামা শিবিরে প্রবেশ করেন, শিবিরে গিয়ে ধৃষ্টদ্যুম্নকে দেখা মাত্র তাকে হত্যা করেন অশ্বত্থামা। অশ্বত্থামা প্রথমে পাণ্ডব সেনাপতি এবং তার পিতার হত্যাকারী ধৃষ্টদ্যুম্নকে লাথি মেরে জাগিয়ে তোলেন। [৮] অশ্বত্থামা অর্ধ-জাগ্রত ধৃষ্টদ্যুম্নকে প্রহার করেন এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। ধৃষ্টদুম্ন্য তার হাতের তলোয়ারের আঘাতে মারা যেতে চান, শেষ পর্যন্ত অশ্বত্থামা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারপরে অশ্বত্থামা শিখণ্ডী, উত্তমৌজ, যুধামন্যু, উপপাণ্ডব (তাদেরকে পাণ্ডব বলে মনে করে) এবং পাণ্ডব বাহিনীর অন্যান্য অনেক বিশিষ্ট যোদ্ধা সহ অবশিষ্ট যোদ্ধাদের হত্যা করে। বেশিরভাগ যোদ্ধা এমনকি ফিরে লড়াই করেছিলেন তবে অশ্বত্থামা এগারো জন রুদ্রের একজন হিসাবে তাঁর সক্রিয় দক্ষতার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ছিলেন না। যারা অশ্বত্থামার ক্রোধ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল তাদের শিবিরের প্রবেশদ্বারে কৃপ ও কৃতবর্মা কুপিয়ে হত্যা করে।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তিন যোদ্ধা দুর্যোধনকে খুঁজতে যায়। তার কাছে সমস্ত পাঞ্চালদের মৃত্যুর খবর জানানোর পরে, তারা ঘোষণা করে যে পাণ্ডবরা আর নেই। দুর্যোধন তার কথা বিশ্বাস করে না এবং তার কাছে ভীমের মাথা দাবি করে দুর্যোধনকে সে ভীমের পুত্রের মাথা দেয়। দুর্যোধন রাগের বশবর্তী হয়ে এটিকে ঘুষি মারেন যা তাকে নিশ্চিত করে যে এটি ভীমের মাথা ছিল না। তিনি অশ্বত্থামাকে তার মূর্খতার জন্য তিরস্কার করেন এবং শোকে কাঁদেন যে তিনি তার বংশের শেষ উত্তরাধিকারীদের নির্মূল করেছেন। এর মাধ্যমে, দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে সতর্ক করার আগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন যে অর্জুন অবশ্যই তাঁর পতনের জন্য আসবেন এবং পরের দিন সকালে কৌরব সৈন্যবাহিনীর বাকি তিন যোদ্ধা মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
উল্লেখ্য, এই সময় পঞ্চপাণ্ডব, কৃষ্ণ গঙ্গাতীরে অবস্থান করছিলেন। এদিকে ধৃষ্ট্যদ্যুম্নের সারথি কোন এক ফাঁকে শিবির থেকে পালিয়ে এসে এই মর্মান্তিক ঘটনার বিবরণ পাণ্ডবদের জানায়।এসব ঘটনার খবর শুনে যুধিষ্ঠির অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং পাণ্ডবরা অসহায় হয়ে পড়ে। ভীম ক্রুদ্ধ হয়ে দ্রোণপুত্রকে হত্যা করতে ছুটে যান। হৃদয় বিদারক খবরটি পেয়ে শিবিরে ফিরে আসার পর পুত্রশোকাহত দ্রৌপদীকে শান্ত করতে তাকে যেকোনো প্রকারে বধ করতে যান অর্জুন। তারা তাকে গঙ্গার তীরে ঋষি ব্যাসের আশ্রমে খুঁজে পায়। এখনও জীবিত পাণ্ডবদের দেখে উদ্দীপ্ত অশ্বত্থামা তাদের হত্যার প্রতিজ্ঞা পূরণের জন্য ঘাসের একটি ছোট ফলক থেকে পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে ব্রহ্মশিরাস্ত্রকে আহ্বান জানায়। কৃষ্ণ অর্জুনকে আত্মরক্ষার জন্য অশ্বত্থামার বিরুদ্ধে তার নিজের ব্রহ্মশিরাস্ত্রে অগ্নিসংযোগ করতে বলেন। বেদব্যাসের মধ্যস্থতায় বিপর্যয় নিবৃত্ত হয়। ব্যাস নিজ যোগশক্তির দ্বারা ধ্বংসাত্মক অস্ত্রগুলিকে একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে বাধা দেন। তিনি অর্জুন এবং অশ্বত্থামা উভয়কেই তাদের অস্ত্র ফিরিয়ে নিতে বলেন। অর্জুন কীভাবে তা করতে হয় তা জেনে তা ফিরিয়ে নেয়।
অশ্বত্থামা অবশ্য জানতেন না কীভাবে (দ্রোণ তাকে শেখাননি কীভাবে ব্রহ্মশির অস্ত্রটি ফিরিয়ে নেওয়া যায় কারণ তিনি জানতেন যে তিনি অর্জুনের মতো ধৈর্যশীল এবং সক্ষম নন এবং অবশ্যই এটি নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করবেন, তাই তিনি এই অস্ত্র ব্যবহার করার ক্ষমতা হ্রাস করেছিলেন। শুধুমাত্র একবার তাকে কীভাবে ডাকতে হয় তা শিখিয়ে দিয়েছিলেন) এই অস্ত্র নিবৃত্ত করতে হয়। পাণ্ডববংশের নাশ করার প্রয়াসে অশ্বত্থামা ব্রহ্মাস্ত্রকে গর্ভবতী উত্তরার গর্ভের দিকে পুনঃনির্দেশিত করে। কিন্তু অস্ত্র গিয়ে উত্তরার গর্ভে থাকা সন্তানের উপর পড়ে। দ্রৌপদী, সুভদ্রা এবং সুদেষ্ণার অনুরোধে কৃষ্ণ উত্তরার অনাগত সন্তানকে ব্রহ্মশিরাস্ত্রের প্রভাব থেকে রক্ষা করেন। তখন অশ্বত্থামাকে তার কপালে রত্নটি সমর্পণ করতে বাধ্য করা হয়।
অশ্বত্থামার শাস্তি
[সম্পাদনা]অশ্বত্থামার এই পাপকর্মের কারণে শ্রীকৃষ্ণ অশ্বত্থামাকে ৩০০০ বছর ধরে দুঃখভোগের অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন যে, তুমি যেভাবে তোমার পাপকর্মের দ্বারা দ্রৌপদীর এবং উত্তরার প্রেমকে চিরকালের জন্য দুঃখিত করেছ, ঠিক একইভাবে তোমার এই অমূল্য রত্নটির ব্যত্যয় তুমিও ভোগ করবে। আঘাতের রক্ত এবং পুঁজ নিয়ে বনে ঘুরে বেড়াবে। ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকবে,মৃত্যু চাইবে কিন্তু মরবে না। শারীরিক এবং মানসিক আঘাত সহ্য করে অন্যদের যে যন্ত্রণা দিয়েছেন তা অনুভব করতে সক্ষম হবে এবং কখনও শান্তি পাবে না, এর পরেই অশ্বত্থামা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। [৯] অশ্বত্থামা তখন বনে চলে যান যাতে আর দেখা না হয়। [১০] পবিত্র স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, পরে ঋষি বেদব্যাসের পরামর্শে, অশ্বত্থামা বহু বছর ধরে ভগবান শিবের কঠোর তপস্যা করেন এবং তাঁর ভক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অবশেষে ভগবান শিব অশ্বত্থামাকে শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেন। এবং এটিও বলা হয় যে এই মুহুর্তটিই ছিল যখন অশ্বত্থামা শিবের আশীর্বাদে অমর হয়েছিলেন।
বংশ
[সম্পাদনা]ইতিহাসবিদ আর. সাথিয়ানথায়ার এবং ডি. সি. সিরকার একটি তত্ত্ব প্রস্তাব করেছেন, যার সমর্থন করেছেন হারমান কুলকে, ডায়েটমার রদারমুন্ড এবং বার্টন স্টেইন। সিরকার উল্লেখ করেছেন, পল্লবদের পারিবারিক কিংবদন্তিগুলি অশ্বত্থামা থেকে একজন পূর্বপুরুষ এবং একজন নাগ রাজকুমারীর সাথে তার মিলনের কথা বর্ণনা করে। এই মিলন থেকে যে পুত্রের জন্ম হয়েছিল, তিনিই এই রাজবংশের সূচনা করেছিলেন। দাবিটি এই সত্যকে সমর্থন করে যে কাঞ্চিপুরমে পল্লবরা বাস করতেন এবং এটি পূর্বে নাগ রাজ্যের একটি অংশ ছিল।
আরও একটি প্রমাণ হল পালাভ মারাঠা পরিবারের গোত্র হল ভরদ্বাজ (অশ্বত্থামার পিতামহ), যা পল্লবরা তাদের নথিতে নিজেদের বলে দাবি করেছে। [১১]
তিরুবনন্তপুরমের বিখ্যাত অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দিরে অশ্বত্থামার একটি মন্দির রয়েছে।
সাহিত্য
[সম্পাদনা]সপ্ত চিরঞ্জীবি স্তোত্রম্ হল একটি মন্ত্র যা হিন্দু সাহিত্যে বৈশিষ্ট্যযুক্ত :
अश्वत्थामा बलिर्व्यासो हनुमांश्च विभीषण:।
कृप: परशुरामश्च सप्तैतै चिरजीविन:॥
सप्तैतान् संस्मरेन्नित्यं मार्कण्डेयमथाष्टमम्।
जीवेद्वर्षशतं सोपि सर्वव्याधिविवर्जितः॥অশ্বত্থামা বলির্ব্যাসো হনুমাংশ্চ বিভীষণঃ |
কৃপঃ পরশুরামশ্চ সপ্তৈতে চিরজীবিনঃ ||
সপ্তৈতান্ সংস্মরেন্নিত্যং মার্কণ্ডেয়মথাষ্টমম্ |
জীবেদ্বর্ষশতং প্রাজ্ঞঃ অপমৃত্যুবিবর্জিতঃ ||
— সপ্ত চিরঞ্জীবি স্তোত্রম্
মন্ত্রটি বলে যে আটজন অমর (অশ্বত্থামা, মহাবলী, ব্যাস, হনুমান, বিভীষণ, কৃপ, পরশুরাম এবং মার্কণ্ডেয়) ব্যক্তির যে নিত্য স্মরণ করে, সে অসুস্থতা এবং স্বল্পায়ু থেকে মুক্তি পেতে পারে।
ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে অশ্বত্থামার ভূমিকা
[সম্পাদনা]পরশুরাম, ঋষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস এবং কৃপাচার্যের সাথে অশ্বত্থামাকে কলিযুগে ঋষিদের মধ্যে অগ্রগণ্য বলে মনে করা হয়।[১২] অশ্বত্থামা পরবর্তী ঋষি ব্যাস হয়ে উঠবেন, যিনি বর্তমান ৭ম মন্বন্তরের ২৯ তম মহাযুগে বা যুগচক্রে বেদকে ভাগ করবেন। অশ্বত্থামা ঋষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস, কৃপ এবং পরশুরামের সাথে অষ্টম মন্বন্তরে সপ্তর্ষিদের একজন হয়ে উঠবেন।[১৩]
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
[সম্পাদনা]- শ্রী কৃষ্ণ সত্যে এম. প্রভাকর রেড্ডি অশ্বত্থামার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
- ১৯৮৮ সালের মহাভারত টিভি সিরিজে, প্রদীপ রাওয়াত অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
- কৃষ্ণ-এ, মুকুল নাগ অশ্বত্থামাকে চিত্রিত করেছিলেন।
- ২০১৩ সালের মহাভারত টিভি সিরিজে, অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অঙ্কিত মোহন।
- টিভি সিরিজ সূর্যপুত্র কর্ণ -এ কুনাল বক্সী অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
- ধর্মক্ষেত্রে, অশ্বত্থামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সৌরভ গয়াল।
- কুরুক্ষেত্রে, অশ্বত্থামাকে ভারত গৌড়া চিত্রিত করেছিলেন।
- এক অর মহাভারতে, অশ্বথামা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অশোক লোখান্ডে।
- কল্কি ২৮৯৮ এ.ডি -এ অশ্বথামা চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "The Mahabharata, Book 5: Udyoga Parva: Uluka Dutagamana Parva: section CLXVIII"। www.sacred-texts.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৪।
- ↑ মহাভারতের চরিতাবলী–সুখময় ভট্টাচার্য
- ↑ অশ্বত্থামা
- ↑ দ্রোণাচার্য্য-অশ্বত্থামা সংবাদ
- ↑ অশ্বত্থামা কর্ত্তৃক কর্ণকে ভর্ৎসনা
- ↑ "The Mahabharata, Book 7: Drona Parva: Drona-vadha Parva: Section CCI"। www.sacred-texts.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৪।
- ↑ "The Mahabharata, Book 8: Karna Parva Index"। www.sacred-texts.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৪।
- ↑ "The Mahabharata, Book 10: Sauptika Parva: Section 8"।
- ↑ যুদ্ধশেষ
- ↑ Chaturvedi, B. K. (২০২০)। Srimad Bhagwat Puran (ইংরেজি ভাষায়)। Diamond Pocket Books Pvt Ltd। পৃষ্ঠা 16। আইএসবিএন 978-81-288-2252-0।
- ↑ Vaidya C. V. (১৯২১)। History Of Medieval Hindu India। পৃষ্ঠা 281।
- ↑ K M Ganguly (1883-1896). The Mahabharata, Book 13 Anusasana Parva, SECTION CL sacred-texts.com, October 2003, Retrieved 2014-02-11
- ↑ বিষ্ণু পুরাণ। তৃতীয় অংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]Original text online (সংস্কৃত ভাষায়)
- GRETIL etext (Muneo Tokunaga)
- Mahābhārata online
- History: Encounters with Ashvatthama ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মে ২০১৫ তারিখে