আন্দীয় দেশসমূহের সংগঠন
আন্দীয় দেশসমূহের সংগঠন (স্পেনীয় ভাষায়: Comunidad Andina de Naciones কোমুনিদাদ আন্দিনা দে নাসিওনেস) দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুকে নিয়ে গঠিত একটি বাণিজ্য ব্লক। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি আন্দীয় প্যাক্ট নামে পরিচিত ছিল। ১৯৬৯ সালে কার্তাহেনার চুক্তি (Acuerdo de Cartagena আকুয়ের্দো দে কার্তাহেনা) স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশগুলি এই সমঝোতায় আসে। সংগঠনটির সদর দপ্তর পেরুর রাজধানী লিমায় অবস্থিত।
আন্দীয় দেশসমূহের সংগঠনে প্রায় ৪৭ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১২ কোটি লোকের বাস। ১৯৬৯ সালে কার্তাহেনা-তে বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু, ভেনেজুয়েলা, ও চিলি একটি অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তিটির লক্ষ্য ছিল লাতিন আমেরিকার অন্যান্য উন্নত দেশের সাথে চুক্তির সদস্য দেশগুলির প্রতিযোগিতা করার দক্ষতা বাড়ানো। সামরিক স্বৈরশাসক আউগুস্তো পিনোশের অধীনে চিলি ১৯৭৬ সালে চুক্তি ছেড়ে চলে যায়। ১৯৮৪ সালে মার্কিন ডলারের প্রতি নির্ভরশীলতা কমাতে দেশগুলিতে আন্দীয় পেসো নামক নতুন একটি মুদ্রার প্রচলন করা হয়। ১৯৯২ সালে দেশগুলির মধ্যবর্তী শুল্কের হার কমিয়ে দেয়া হয়, কিন্তু চুক্তির বাইরের দেশগুলি থেকে আমদানির উপর উচ্চ শুল্ক ধার্য করা হয়। ১৯৯২ সালে পেরু চুক্তি থেকে নিজেকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নেয় এবং ১৯৯৫ সালে ইকুয়েডরের সাথে একটি সীমান্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, ফলে চুক্তির দলগুলির মধ্যে সংহতি দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯৯৯ সালে ব্লকটি দক্ষিণ আমেরিকার আরেকটি বড় বাণিজ্য ব্লক মের্কোসুরের সাথে মিলিত হয়ে একটি অভিন্ন দক্ষিণ আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য এলাকা গড়তে আলোচনা শুরু করে।
২০০৫ সাল থেকে আন্দীয় সংগঠনের সদস্য দেশগুলির নাগরিকেরা ভিসা ছাড়াই জাতীয় পরিচয় কার্ড ব্যবহার করে অন্য সদস্য দেশে আসা-যাওয়া করতে পারেন। এজন্য ২০০১ সালে তাদের জন্য একটি বিশেষ আন্দীয় পাসপোর্ট পরিকল্পনা করা হয় ও ২০০৬ সালে তা বিতরণ শুরু হয়।
২০০৬ সালে উগো চাবেসের নেতৃত্বাধীন ভেনেজুয়েলা চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় ও মের্কোসুরে যোগ দেয়। চাবেস পেরু ও কলম্বিয়ার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংগঠনের পক্ষে ক্ষতিকর চুক্তিকে তার এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।