ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা
নীতিবাক্য | 'Emollit mores nec sinit esse feros' (লাতিন) "Learning humanizes character and does not permit it to be cruel"(ইংরেজি) "শিক্ষা মানবতাবোধ জাগায়, পাশবিকতাকে পরাভূত করে" (বাংলা) |
---|---|
ধরন | পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ১৮০১ |
বৃত্তিদান | USD $৫১৩.৯ মিলিয়ন (২০১২) |
সভাপতি | হ্যারিস প্যাস্টাইডস |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ১,৬২০+ |
শিক্ষার্থী | ৪৬,৬৭২ (সর্বমোট), ৩২,২৬৪ (কলাম্বিয়া) |
অবস্থান | , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে, মূল ক্যাম্পাস ৩৫৯ একর |
পোশাকের রঙ | Garnet and Black[১] |
সংক্ষিপ্ত নাম | সাউথ ক্যারোলাইনা গেমকক্স (Gamecocks) |
মাসকট | ককি (Cocky) |
ওয়েবসাইট | www.sc.edu |
ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এর সাউথ ক্যারোলাইনা অংগরাজ্যের কলাম্বিয়া শহরে অবস্থিত একটি গবেষণাকেন্দ্রিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৩৫০ টি বিষয়ে শিক্ষাদান করা হয় এবং স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হ্য়। বিশ্ববিদ্যালয়টির ৬ টি ক্যাম্পাস রয়েছে এবং এর অধীনে ১৪ টি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাক্রম পরিচালনা করে থাকে। এর মূল ক্যাম্পাসটি কলাম্বিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে ৩৫৯ একর জুড়ে অবস্থিত। ফল ২০১৩ সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো ক্যাম্পসে সর্বমোট ৪৬,৬৭২ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়, যার ৩২,২৬৪ জন মূল ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত রয়েছে।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮০১ সালের ১৯শে ডিসেম্বর, সাউথ ক্যারোলাইনা কলেজ হিসেবে। এর উদ্যোক্তা ছিলেন তদানীন্তন গভর্নর জন ড্রেটন। ১৮০৫ সালের ১০ জানুয়ারি ৯ জন ছাত্র নিয়ে কলেজটি যাত্রা শুরু করে। এ কলেজের প্রথম আচার্য (প্রেসিডেন্ট) ছিলেন ব্যাপটিস্ট প্রচারক এবং ধর্মতাত্ত্বিক রেভারেন্ড জোনাথন ম্যাক্সি। ইতিপূর্বে তিনি ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়-এর দ্বিতীয় এবং ইউনিয়ন কলেজের তৃতীয় আচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আমেরিকান গৃহযুদ্ধের সূচনালগ্নে সাউথ ক্যারোলাইনা কলেজের স্নাতকেরা ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, যার কারণে প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র দক্ষিণের প্রতীক হয়ে ওঠে।
১৮৬২ সালের ২৫শে জুন রাজ্য সরকারের অণুমতিক্রমে কনফেডারেট সরকার কলেজ ভবনগুলো অধিগ্রহণ করে এবং হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। কলেজের ছাত্রেরা সেনাবাহিনীতে যোগদান করলে কলেজটি ছাত্র-স্বল্পতার সম্মুখীন হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ১৮৬৩ সালের ২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজটি বন্ধ ঘোষণা করেন।
১৮৬৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউনিয়ন সেনাবাহিনী কলাম্বিয়া এসে পৌঁছায় এবং ২৪শে মে কলেজটি অধিগ্রহণ করে। অনিশ্চিত ভবিষ্যত সত্ত্বেও ১৯শে জুন ইউনিয়ন বাহিনীর জেনারেল জন পোর্টার হ্যাচ কলেজটি যথাশীঘ্র পুনরায় চালু করার আহবান জানিয়ে এর প্রাক্তন অধ্যাপকদের চিঠি দেন। ৩০শে জুন সাউথ ক্যারোলাইনার ভারপ্রাপ্ত গভর্নর হয়ে আসেন বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন পেরি, যিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে পুনর্বহাল করেন। সাউথ ক্যারোলাইনার দারিদ্র্যমোচনের জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন এবং রাজ্যসভার প্রতিনিধিদের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেন। ১৮৬৫ সালের ১৯শে ডিসেম্বর রাজ্যের সাধারণ সভায় ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা প্রতিষ্ঠার জন্যে বিল পাশ হয়।
১৮৬৮ সালে র্যাডিকেল রিপাবলিকানেরা রাজ্য সরকার গঠন করার পর বিশ্ববিদ্যালয়টিকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হয় এবং এক্ষেত্রে র্যাডিকেলদের রাজনৈতিক ও সামাজিক মতবাদের সুস্পষ্ট প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। গভর্নরের বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৮৬৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা গাত্রবর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ১৮৭৩ সালের ৭ই অক্টোবর হেনরি ই হাইনে (পরবর্তীতে সাউথ ক্যারোলাইনার স্টেট সেক্রেটারি) প্রথম কালো শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। এর প্রতিবাদে তিনজন অধ্যাপক চাকুরিতে ইস্তফা দেন, প্রায় সকল ছাত্র ক্লাস বর্জন করে। এসময় ছাত্রসংখ্যা ৮-এ নেমে আসে, যাদের অধিকাংশই ছিলেন অধ্যাপকদের সন্তান। ছাত্রসংখ্যা বাড়ানোর জন্য হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু ছাত্রকে সাউথ ক্যারোলাইনাতে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া ভর্তিচ্ছুদের বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হয় এবং একটি বিশেষ বৃত্তি (২০০ ইউএস ডলার) ঘোষণা করে বিল পাশ হয়।
র্যাডিকেল রিপাবলিকানদের সংস্কারবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণে চরমপন্থী সাদা-আধিপত্যবাদী কিছু গোষ্ঠী (ডেমোক্র্যাট পার্টির অতি-রক্ষণশীল অংশ) মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এরা সমষ্টিগতভাবে রিডিমার বা পরিত্রাতা নামে পরিচিত ছিল। পুনর্গঠন-পরবর্তী ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা (যার ৯০% ছাত্রই ছিল কালো) তাদের রোষের শিকার হয়। ১৮৭৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট পার্টি বিজয়ী হলে রিডিমারদের উদ্যোগে ১৮৭৭ সালের ৭ই জুন বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরের বছর মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পুন্রায় চালু করার উদ্যোগ গৃহীত হয়। তবে এবার সাদা এবং কালো শিক্ষার্থীদের জন্য দুইটি পৃথক কলেজ সৃষ্টির প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। ফলশ্রুতিতে ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা সাদা ছাত্রদের জন্য সাউথ ক্যারোলাইনা কৃষি ও কারিগরি কলেজ (South Carolina College of Agriculture and Mechanical Arts) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অপরদিকে কালো শিক্ষার্থীদের জন্য কলাম্বিয়া থেকে দূরে অরেঞ্জবার্গে ক্ল্যাফলিন কলেজ নামক একটি পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়।
কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় (১৮৯১ - ১৯৪৪)
[সম্পাদনা]এলাকার কৃষিজীবী জনগণের চাপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কৃষিবিদ্যা কলেজে রূপান্তরিত করা হলেও তা প্রত্যাশিত সাফল্যের মুখ দেখেনি। ১৮৭৭ সালে পুনরায় কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদায় উন্নীত করা হয়, যদিও ছাত্র-স্বল্পতার কারণে কয়েক বছরের মধ্যেই, ১৮৯১ সালে, আবারও তাকে কলেজের স্তরে নামিয়ে আনা হয়। তৎকালীন গভর্নর বেন টিলম্যানের অসহযোগিতা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটায়। সকল বিপর্যয় সত্ত্বেও ১৮৯৩ সালে কলেজে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য বিল পাশ হয়। ১৮৯৪ সালে কলেজের পাঠক্রমে ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশল বিভাগ যুক্ত হয়।
১৯০২ সালের গভর্নর ইলেকশনে জয়লাভ করে ডানকান ক্লিঞ্চ হেওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়টি পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেন। ১৯০৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তবে রাজ্য সরকার ও স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যকার টানাপোড়েনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বেগ পেতে হয়। ১৯১৭ সালে ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা সাউথ ক্যারোলাইনার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলা প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে Southern Association of Colleges and Schoolsএর অণুমোদন (Accreditation) লাভ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা সামলে বিশ্ববিদ্যালয়টি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সাময়িকভাবে নৈবাহিনীর একটি কলেজে রূপান্তরিত করা হয়। তবে কলেজের পড়ালেখা ও অন্যান্য কার্যকলাপে নৌ-সেনাদের অংশগ্রহণ ক্যাম্পাসের নতুন আকর্ষণ হয়ে দাঁড়ায়।
পূর্ণাংগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৪৪ - বর্তমান)
[সম্পাদনা]দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর যুদ্ধ-ফেরত তরুণেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে থাকে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-সংখ্যা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। ১৯৫২ সালে ডোনাল্ড রাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে আসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম ও অবকাঠামোর উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনটি ("রাসেল হাউজ") তার নাম বহন করে চলেছে।
১৯৫৭ সালে ফ্লোরেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পরিবর্ধিত ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৯ সালে বোফোর্ট, ল্যাংকাস্টার ও কনওয়েতে এবং ১৯৬১ সালে আইক্যানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো ৫টি পরিবর্ধিত ক্যাম্পাস গড়ে ওঠে।
ষাটের দশকের শুরু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে বর্ণবৈষম্য দূর করার দাবি উঠতে থাকে। দক্ষিণের আরো ৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ক্লেমসন, আলাবামা ও মিসিসিপি) পদাংক অণুসরণ করে ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা ১৯৬৩ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর তিনজন কালো ছাত্রকে ভর্তি করে। ক্রমশ আরো ছাত্র যোগ হয় ও দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা বর্ণবৈষম্যের অবসান ঘটে।
সত্তরের দশকে আয়ালেন্ডেল, স্পার্টানবার্গ, ইউনিয়ন ও ওয়াল্টারবোরো'তে ইউএসসি'র পরিবর্ধিত ক্যাম্পাস গড়ে ওঠে। এ ছাড়াও ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামটার ক্যাম্পাসটি অধিগ্রহণ করে। ১৯৭৭ সালে জেমস হোল্ডারম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার 'ক্যারোলাইনা প্ল্যান' ১ এবং ২ পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্বনিদ্যালয়টিকে একটি পূর্ণাংগ, আন্তর্জাতিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়। এ সময় আন্তর্জাতিক নেতা ও পন্ডিতদের পদচারণায় বিশ্ববিদ্যালয় মুখর হয়ে ওঠে[৩]। তবে হোল্ডারম্যান-এর বিদায় প্রীতিকর হয়নি। সাংবাদিকতার ছাত্র পল পারকিন্স বিদেশাগত খন্ডকালীন অধ্যাপক জেহান সাদাতের (মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের স্ত্রী) পারিশ্রমিক জানতে চাইলে হোল্ডারম্যান অপারগতা প্রকাশ করেন। এর জের ধরে সাংবাদিকদের তদন্তে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের সংবাদ বেরিয়ে এলে, ১৯৯০ সালে, হোল্ডারম্যান পদত্যাগ করেন [৪]।
পরবর্তী দুই দশকে ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে এবং বর্তমান অবস্থায় এসে পৌঁছয়।
ক্যাম্পাস
[সম্পাদনা]ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা ক্যাম্পাস সুদৃশ ও ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নানান স্থাপনায় সজ্জিত। ক্যাম্পাসের আদি অবস্থান, যা হর্সশু নামে পরিচিত, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর তালিকা National Register of Historic Places-এ জায়গা করে নিয়েছে। ক্যাম্পাসের আরো এগারোটি ভবন গৃহযুদ্ধের সময় থেকে আজ পর্যন্ত টিকে আছে।
বর্তমান ক্যাম্পাসের উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে লংস্ট্রিট থিয়েটার, থমাস কুপার লাইব্রেরি, রাসেল হাউজ, ক্যারোলাইনা কলিজিয়াম (মিলনায়তন), স্ট্রম থার্মন্ড ওয়েলনেস এন্ড ফিটনেস সেন্টার (ব্যায়ামাগার), কোগার সেন্টার ফর আর্টস, গ্রীকপল্লী, কলোনিয়াল লাইফ এরেনা, ম্যাককিসিক জাদুঘর, ২৪টি আবাসিক হল, এবং অসংখ্য একাডেমিক ভবন ও গবেষণাগার। ক্যাম্পাস থেকে এক মেইল দূরত্বে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মাঠ, উইলিয়ামস-ব্রাইস স্টেডিয়াম, যা ভক্তদের কাছে ককপিট নামে পরিচিত। এ ছাড়াও খেলোয়াড়দের জন্য রয়েছে আবাসিক সুবিধা, আরো বেশ কয়েকটি মাঠ ও ব্যায়ামাগার। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য-সমস্যা লাঘবের জন্য রয়েছে একটি আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র, থমসন হেলথ সেন্টার।
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস সার্ভিস রয়েছে যা ৭টি রুটে যাত্রী আনা-নেওয়া করে। এ ছাড়াও সান্ধ্যকালীন শাটলেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
গবেষণা
[সম্পাদনা]'কার্নেগি ফাউন্ডেশন ফর দ্য এডভান্সমেন্ট অফ টিচিং' যুক্তরাষ্ট্রের যে ৬২ টি সরকারি ও ৩২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে 'অত্যন্ত গবেষণা-প্রবণ' (Research institution with very high reserach activity) বলে চিহ্ণিত করেছে ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা তার একটি। ২০১৩ অর্থবছরে এ বিশ্ববিদ্যালয় ২২০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের গবেষণা অণুদান লাভ করে[৫]।
ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনার গবেষণা কার্যক্রমকে মোটা দাগে চারটি অংশে ভাগ করা যায়—স্বাস্থ্যবিজ্ঞান (Health sciences), উন্নত বস্তুবিদ্যা (Advanced materials), শক্তি(Energy), এবং পরিবেশ ও সংরক্ষণ (Environment and Sustainability). গবেষণায় পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখানে ১২৫ টি গবেষণা ইন্সটিটিউট গড়ে তোলা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম একাধারে আঞ্চলিক ও জাতীয় উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে।
শিক্ষার্থী-বৃত্তান্ত
[সম্পাদনা]সাউথ ক্যারোলাইনা অংগরাজ্যের ৪৬ টি কাউন্টি থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩০,০০০ শিক্ষার্থী ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনায় ভর্তি হয়। এ ছাড়াও যুক্ত্রাষ্ট্রের ৫০ টি অংগরাজ্য এবং বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি দেশ থেকে শিক্ষার্থী এখানে পড়তে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩ সালের ফল সেমিস্টার নাগাদ শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান নিম্নরূপ[৬]--
- স্নাতক-শ্রেণিঃ ৮৩%, স্নাতকোত্তর ও অন্যান্যঃ ১৭%
- নারীঃ ৫৭%, পুরুষঃ ৪৩%
- পূর্ণকালীনঃ ৮২%, খন্ডকালীনঃ ১৮%
- আন্তর্জাতিকঃ ৩.৪%
খেলাধুলা
[সম্পাদনা]ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা ক্লাব, অন্তঃ ও আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় খেলার পৃষ্ঠপোষকতা করে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগে (Southeast Conference, SEC) অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি দল রয়েছে। এ দলগুলো বেসবল, বাস্কেটবল, ফুটবল, টেনিস, গল্ফ, সাঁতার ও ঘোড়দৌড়সহ নানা ধরনের খেলায় অংশ নিয়ে থাকে। এ দলগুলোকে সাউথ ক্যারোলাইনা গেমককস (Gamecocks) বা 'লড়াকু মোরগ' বলে ডাকা হয়। এ নামটি আমেরিকান বিপ্লবের সাউথ ক্যারোলাইনা অঞ্চলের কুশলী যোদ্ধা থমাস সামটারের স্মৃতিবহন করে, প্রতিপক্ষ বৃটিশদের কাছে যার ডাকণাম ছিল গেমকক। গেমককস এ যাবতকালের মধ্যে (২০১৪) আটটি দলগত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও ব্যক্তি পর্যায়ে অসংখ্য সাফল্য অর্জন করেছে। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপগুলোর মধ্যে ২০১০ ও ২০১১-এর বেসবল চ্যাম্পিয়নশিপ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য[৭]।
এ ছাড়াও ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনার খেলোয়াড়েরা অলিম্পিকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য --
- টনিক উইলিয়ামস-ডার্লিং - ৪০০ মি. রেসে বাহামার পক্ষে স্বর্ণজয়ী (২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকস, ২০০৫ বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশিপ)
- আলিন বেইলি - ৪x১০০ মি. রিলে রসে স্বর্ণজয়ী জামাইকা দলের সদস্য (২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকস, ২০০৯ বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশিপ)
- শ্যানন জনসন - মহিলা বাস্কেটবলে স্বর্ণজয়ী যুক্তরাষ্ট্র দলের সদস্য (২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকস, ২০০২ বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশিপ)
- এডাম এভারেট - বেসবলে স্বর্ণজয়ী যুক্তরাষ্ট্র দলের সদস্য (২০০০ সিডনি অলিম্পিকস)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ বিদ্যালয়-রঙ
- ↑ Hollis, Daniel Walker (1956). University of South Carolina II. University of South Carolina Press.
- ↑ A 'diplomat' puts University of South Carolina on the map, By Daniel Southerland, Staff writer of The Christian Science Monitor, October 29, 1984 [১]
- ↑ Henry H. Lesesne, A History of the University of South Carolina, 1940-2000, p. 210, Univ of South Carolina Press (February 2002)আইএসবিএন ৯৭৮-১-৫৭০০৩-৪৪৪-২
- ↑ সাউথ ক্যারলাইনায় গবেষণা
- ↑ সাউথ ক্যারোলাইনায় ছাত্র-ভর্তি, ফল ২০১৩
- ↑ South Carolina wins second baseball national title (USA TODAY), ০৬-৩০-২০১১ [২]