বিষয়বস্তুতে চলুন

জেন ক্যাম্পিয়ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডেম

জেন ক্যাম্পিয়ন

Jane Campion
২০১৬ সালে ক্যাম্পিয়ন
জন্ম
এলিজাবেথ জেন ক্যাম্পিয়ন

(1954-04-30) ৩০ এপ্রিল ১৯৫৪ (বয়স ৭০)
পেশা
দাম্পত্য সঙ্গীকলিন ডেভিড ইংলার্ট (বি. ১৯৯২; বিচ্ছেদ. ২০০১)
সন্তান২; অ্যালিস ইংলার্ট-সহ
পিতা-মাতাইডিথ ক্যাম্পিয়ন (মাতা)
রিচার্ড ক্যাম্পিয়ন (পিতা)
স্বাক্ষর

ডেম এলিজাবেথ জেন ক্যাম্পিয়ন ডিএনজেডএম (জন্ম ৩০ এপ্রিল ১৯৫৪) একজন নিউজিল্যান্ডীয় পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।[] তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত দ্বিতীয় নারী পরিচালক এবং পাল্ম দর বিজয়ী প্রথম নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি দ্য পিয়ানো (১৯৯৩) চলচ্চিত্রের জন্য এই সম্মান অর্জন করেন এবং এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[] তিনি দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ (২০২১) চলচ্চিত্রের জন্য ৭৮তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রৌপ্য সিংহ অর্জন করেন।[] এছাড়া ক্যাম্পিয়ন অ্যান অ্যাঞ্জেল অ্যাট মাই টেবল (১৯৯০), হলি স্মোক! (১৯৯৮), ও ব্রাইট স্টার (২০০৮) চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য সুপরিচিত।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

ক্যাম্পিয়ন ১৯৫৪ সালের ৩০শে এপ্রিল নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ইডিথ ক্যাম্পিয়ন (বিবাহপূর্ব বেভারলি জর্জেট হ্যানা) একজন অভিনেত্রী ও লেখিকা এবং পিতা রিচার্ড এম. ক্যাম্পিয়ন একজন অভিনয়ের শিক্ষক এবং মঞ্চ ও গীতিনাট্য পরিচালক।[][][] জেন তার পিতামাতার দ্বিতীয় কন্যা। তার প্র-মাতামহ রবার্ট হ্যানা একজন প্রখ্যাত জুতা প্রস্তুতকারক ছিলেন।[]

তিনি এবং তার দেড় বছরের বড় বোন অ্যানা ও সাত বছরের ছোট ভাই মাইকেল নিউজিল্যান্ডের মঞ্চজগতের সাথে পরিচিতি নিয়ে বেড়ে ওঠেন।[] তার পিতামাতা নিউজিল্যান্ড প্লেয়ার্সের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[] ক্যাম্পিয়ন শুরুতে নাট্যকলায় কর্মজীবন গড়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না। এর পরিবর্তে তিনি ১৯৭৫ সালে ওয়েলিংটনের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

ক্যাম্পিয়নের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পিল (১৯৮২) ১৯৮৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পাল্ম দর অর্জন করে।[] এরপর তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্যাশনলেস মোমেন্টস (১৯৮৩), আ গার্ল্‌স ওন স্টোরি (১৯৮৪), ও আফটার আওয়ার্স (১৯৮৪) নির্মাণ করেন। অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন স্কুল ত্যাগ করার পর তিনি এবিসির হালকা বিনোদনধর্মী ধারাবাহিক ড্যান্সিং ডেজ (১৯৮৬)-এর একটি পর্ব পরিচালনা করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি জ্যান চ্যাপম্যান প্রযোজিত টিভি চলচ্চিত্র টু ফ্রেন্ডস (১৯৮৬) পরিচালনা করেন।[১০]

সুইটি (১৯৮৯) দিয়ে তার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনায় অভিষেক ঘটে, যা একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। তিনি নিউজিল্যান্ডীয় লেখিকা জ্যানেট ফ্রেমের জীবনীনির্ভর অ্যান অ্যাঞ্জেল অ্যাট মাই টেবল (১৯৯০) নির্মাণ করে আরও খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি দ্য পিয়ানো (১৯৯৩) চলচ্চিত্র দিয়ে বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি অর্জন করেন, এবং এটি ১৯৯৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পাল্ম দর অর্জন করে।[১১] তিনি পাল্ম দর বিজয়ী প্রথম নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা।[১২] এছাড়া এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম ইনস্টিটিউট পুরস্কার এবং ৬৬তম একাডেমি পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনার জন্য অস্কারের মনোনয়ন প্রাপ্ত দ্বিতীয় নারী পরিচালক।[১৩]

তিনি ২০১৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেফনডেশন ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র শাখার জুরি সভাপতি[১৪] এবং ২০১৪ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা শাখার জুরি সভাপতি ছিলেন।[১৫]

২০১৯ সালে তিনি প্রায় এক দশক পরে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেন। টমাস স্যাভেজের উপন্যাস থেকে নির্মিত দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ ২০২১ সালে ৭৮তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।[১৬] ক্যাম্পিয়ন এই চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে রৌপ্য সিংহ অর্জন করেন।[১৭]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্যাম্পিয়ন ১৯৯২ সালে কলিন ডেভিড ইংলার্টের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ইংলার্ট দ্য পিয়ানো চলচ্চিত্রে দ্বিতীয় ইউনিটের পরিচালক ছিলেন।[১৮] তার প্রথম সন্তান জ্যাসপার ১৯৯৩ সালে জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু মাত্র ১২ দিন বেঁচে ছিল।[১৯] তাদের দ্বিতীয় সন্তান অ্যালিস ইংলার্ট ১৯৯৪ সালে জন্মগ্রহণ করে। অ্যালিস একজন অভিনেত্রী। ২০০১ সালে ক্যাম্পিয়ন-ইংলার্ট দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।[২০]

চলচ্চিত্রের তালিকা

[সম্পাদনা]
বছর শিরোনাম ভূমিকা টীকা
পরিচালক চিত্রনাট্যকার প্রযোজক
১৯৮০ টিস্যুস হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
১৯৮১ মিশাপস অব সিডাকশন অ্যান্ড কনকোয়েস্ট হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
১৯৮২ পিল: অ্যান এক্সারসাইজ ইন ডিসিপ্লিন হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
১৯৮৩ প্যাশনলেস মোমেন্টস হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
১৯৮৪ আ গার্ল্‌স ওন স্টোরি হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
আফটার আওয়ার্স হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
১৯৮৬ টু ফ্রেন্ডস হ্যাঁ টেলিভিশন চলচ্চিত্র
১৯৮৯ সুইটি হ্যাঁ হ্যাঁ জেরার্ড লি'র সাথে সহ-রচয়িতা
১৯৯০ অ্যান অ্যাঞ্জেল অ্যাট মাই টেবল হ্যাঁ
১৯৯৩ দ্য পিয়ানো হ্যাঁ হ্যাঁ
১৯৯৬ দ্য পোট্রেট অব আ লেডি হ্যাঁ
১৯৯৯ হোলি স্মোক! হ্যাঁ হ্যাঁ অ্যানা ক্যাম্পিয়নের সাথে সহ-রচয়িতা
সফট ফ্রুট হ্যাঁ
২০০৩ ইন দ্য কাট হ্যাঁ হ্যাঁ সুজ্যানা মোরের সাথে সহ-রচয়িতা
২০০৬ দ্য ওয়াটার ডায়েরি হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
অ্যাবডাকশন: দ্য মেগুমি ইয়োকোটা স্টোরি হ্যাঁ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র
২০০৭ দ্য লেডি বাগ হ্যাঁ হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। টু ইচ হিজ ওন সিনেমা অংশ থেকে।
২০০৯ ব্রাইট স্টার হ্যাঁ হ্যাঁ
২০১২ আ'ম দ্য ওয়ান হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
২০১৩ টপ অব দ্য লেক হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ ছোট ধারাবাহিক
গার্থ ডেভিসের সাথে সহ-পরিচালক
জেরার্ড লি'র সাথে সহ-রচয়িতা
২০১৬ ফ্যামিলি হ্যাপিনেস হ্যাঁ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
২০১৭ দে হ্যাঁ
টপ অব দ্য লেক: চায়না গার্ল হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ ছোট ধারাবাহিক
অ্যারিয়েল ক্লাইম্যানের সাথে সহ-পরিচালক
জেরার্ড লি'র সাথে সহ-রচয়িতা
২০২১ দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ফক্স, অ্যালিস্টেয়ার (২০১১)। Jane Campion: Authorship and Personal Cinema। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৩২। আইএসবিএন 978-0253223012। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  2. "'Piano's' Jane Campion Is First Female Director to Win; 'Concubine's' Chen Kaige Has First Chinese-Film Victory: 'Piano', 'Concubine', Share the Palme D'Or"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ মে ১৯৯৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  3. "Jane Campion wins best director at Venice Film Festival"আরএনজেড (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৯-১২। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  4. ফক্স (২০১১)। Jane Campion profile। পৃষ্ঠা ২৫। আইএসবিএন 978-0253223012 
  5. ম্যাকহিউ, ক্যাথলিন (২০০৭)। Contemporary Film Directors: Jane Campion। ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়, আরবানা। আইএসবিএন 978-0-252-03204-2 
  6. ক্যানবি, ভিনসেন্ট (৩০ মে ১৯৯৩)। "FILM VIEW; Jane Campion Stirs Romance With Mystery"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস 
  7. ফক্স (২০১১)। Jane Campion profile। পৃষ্ঠা ২৬। আইএসবিএন 978-0253223012। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  8. ফক্স (২০০৯)। Jane Campion profile। পৃষ্ঠা ৪১। আইএসবিএন 978-0814334324। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  9. "Awards 1986 : Competition - Festival de Cannes 2015 (International Film Festival)"কান চলচ্চিত্র উৎসব। ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  10. অড্রি ফস্টার, গুয়েন্ডলিন (সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "Girlhood in Reverse – Jane Campion's 2 Friends (1986)"Senses of Cinema। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  11. "Festival de Cannes: The Piano"festival-cannes.com। ৩ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  12. টুরান, কেনেথ (২৫ মে ১৯৯৩)। "CANNES REPORT : 'Piano's' Jane Campion Is First Female Director to Win; 'Concubine's' Chen Kaige Has First Chinese-Film Victory : 'Piano,' 'Concubine' Share the Palme D'Or"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  13. কালফি, জোয়েল (৮ এপ্রিল ২০২১)। "Only 7 Women Have Ever Been Nominated for Best Director at the Oscars—Here Are Their Films & Where to Watch Them"পিওরওয়াও (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  14. "A Palme d'or for the Cinéfondation!"কান চলচ্চিত্র উৎসব। ২৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  15. "Jane Campion to preside over Cannes Film Festival jury"বিবিসি নিউজ। ৭ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  16. ক্রল, জাস্টিন (৬ মে ২০১৯)। "Benedict Cumberbatch, Elisabeth Moss to Star in Jane Campion's New Film"ভ্যারাইটি। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  17. লাটানজিনো, রায়ান। "Venice Film Festival Awards: Golden Lion Goes to Audrey Diwan's 'Happening' (Full List)"ইন্ডিওয়্যার। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  18. "ENGLERT, COLIN DAVID Australia"। বিজনেস প্রোফাইলস। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  19. ফ্র্যাঙ্ক, লিজি (১৯৯৯)। "Jane Campbell Is Called the Best Female Director in the World. What's Female Got to Do with It?"। ওয়েক্সম্যান, ভার্জিনিয়া রাইট। Jane Campion: Interview। ইউনিভার্সিটি প্রেস অব মিসিসিপি। পৃষ্ঠা ২০৭। আইএসবিএন 978-1578060832। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  20. স্যামসন, ডেস (২৪ জানুয়ারি ২০১৩)। "Alice Englert stars in Twilight successor"দ্য নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:জেন ক্যাম্পিয়ন