শালিখা উপজেলা
শালিখা | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে শালিখা উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°২০′২৪.০০০″ উত্তর ৮৯°২১′৩৬.০০০″ পূর্ব / ২৩.৩৪০০০০০০° উত্তর ৮৯.৩৬০০০০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | মাগুরা জেলা |
সরকার | |
• উপজেলা নির্বাহী অফিসার | হাসিনা মমতাজ |
আয়তন | |
• মোট | ২২৮.৮২ বর্গকিমি (৮৮.৩৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১)[১] | |
• মোট | ১,৪৭,৬৬৩ |
• জনঘনত্ব | ৬৫০/বর্গকিমি (১,৭০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৫৫ ৮৫ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
শালিখা বাংলাদেশের মাগুরা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
অবস্থান ও আয়তন
[সম্পাদনা]মাগুরা জেলা শহর থেকে শালিখা উপজেলা ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। শালিখা উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় আড়পাড়া থেকে। এখানে সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও থানা রয়েছে। শালিখা উপজেলার উত্তরে ঝিনাইদহ জেলার ঝিনাইদহ সদর উপজেলা ও মাগুরা সদর উপজেলা, দক্ষিণে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলা, পূর্বে নড়াইল সদর উপজেলা, মাগুরা সদর উপজেলা, নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলা ও মহম্মদপুর উপজেলা, পশ্চিমে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা ও যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলা।
নামকরণ
[সম্পাদনা]‘শালিখা’ স্থাননাম নিয়ে রয়েছে বেশ কিছু লোকপ্রচলিত মতামত। জনশ্রতি রয়েছে এক সময় এ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে শালি ধান জন্মাতো। শালি ধান এখন লোককথায় প্রচলিত। সুলতান শেরশাহের আমলে এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ‘শেরশাহ সড়ক’ নির্মাণকালে শ্রমিকরা শালি ধানের চিড়া খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়ে শালী ধানের সর্বজনীনতা প্রকাশের লে তারা এলাকার নাম দেন ‘শালিখা’। কিন্তু ইতিহাসে এর কোনও ভিত্তি পাওয়া যায় না। অনেকে মনে করেন, ‘শালিখ’ পাখি থেকে শালিখা নামকরণ হতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন এ অঞ্চলের জলাশয়ে জলজ উদ্ভিদ শালুক-এর প্রাচুর্য থেকে শালিখা নাম এসেছে। তবে ঐতিহাসিকদের বর্ণনা ও এ অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস বিবেচনায় শালিখা নামকরণের তাৎপর্যপূর্ণ দুটি দিক বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। একটি হৈমন্তিক ফসল ‘শালি’ ধানের ঐতিহ্য এবং অপরটি ‘শালুক’।
প্রশাসনিক এলাকা
[সম্পাদনা]নির্বাচনী এলাকা ৯২ মাগুরা-২ (জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা) ইউনিয়নের সংখ্যা ৭ টি।
- শতখালী ইউনিয়ন
- শালিখা ইউনিয়ন
- আড়পাড়া ইউনিয়ন
- ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়ন
- বুনাগাতী ইউনিয়ন
- গঙ্গারামপুর ইউনিয়ন
- তালখড়ি ইউনিয়ন
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মুক্তিযুদ্ধে শালিখা : মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে শালিখা ৮নং সেক্টরের অধীনে ছিল। শালিখা স্বাধীন হয় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বার। যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানীদের পরাজিত করার মনে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একাত্ম হয়েছিল এ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা। যুদ্ধকালে বুনাগাতিতে পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করা হয়। উভয় পক্ষে হতাহতের পর পাকসেনাদের ক্যাম্প দখল করে মুক্তিবাহিনী। শালিখা থানা আক্রমণ করে যদিও কোন সাফল্য আসেনি তবুও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যুগিয়েছিল। উপজেলার তালখড়িতে হাজরাহাটির শতখালী সেতু ধ্বংস করার পরিকল্পনা তথ্য পাকবাহিনীর দোসর রাজাকার বাহিনী জেনে যায় এবং অতর্কিতে আক্রমণ করলে নাম না-জানা বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হন যারা ছিলেন পাশ্ববর্তী ফরিদপুর জেলার অধিবাসি। সেখানে এখনও গণকবর বিদ্যমান আছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে শালিখার মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান চিরস্মরণীয়। এ উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গি সংখ্যা ১২৫ জন।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]চন্ডিদাস ও রজকিনীর বসতভিটা মাগুরা সদর থেকে প্রায় ২২ কি.মি. দূরে শতখালী ইউনিয়নের শতখালী গ্রামে এটি অবস্থিত। চন্ডিদাস যেখানে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেন সেই দোহা এখনো দৃশ্যমান। দোহার একপাড়ে এখনো চণ্ডিদাসের বংশধররা বাস করেন। আর রজকিনী যেহেতু ধোপার মেয়ে ছিলেন তার নামানুসারে দোহার অপর পাড়ের নাম ধোপাখালী পাড়া, যেখানে এখনো অতি পুরাতন মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ দেখা যায়।
ছান্দড়া জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ। জমিদারী আমলে ছান্দড়া জমিদার বাড়ি থেকেই এ এলাকার কর, খাজনা আদয় হতো এবং এখান থেকেই এ এলাকা শাসন করা হতো। শালিখা উপজেলার আড়পাড়া বাজার থেকে বাসযোগে সীমাখালী বাজারে গিয়ে নামতে হবে। সীমাখালী বাজার থেকে ভ্যানযোগে ছান্দড়া জমিদার বাড়ি যাওয়া যাবে।[২]
তালখড়ির গোপাল জিউর মন্দির। লোক নাথ সন্ন্যাসী নামক একজন সাধকের জন্মস্থান। কথিত আছে, শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু ও লোকনাথ ব্রহ্মচারী যাত্রাপথে এখানে বিশ্রাম গ্রহণ করেন। মাগুরা সদর থেকে বাসযোগে আড়পাড়া বাসস্ট্যান্ড (১৩ কিলোমিটার) এ নেমে ভ্যান অথবা নছিমন যোগে তালখড়ি বাজার।[৩]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]শালিখা উপজেলা পরিষদ তথ্য ২০১৪-২০১৯
শালিখা উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যা
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৩টি
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়: ৩৩টি
- দাখিল মাদ্রাসা: ১৭টি
- আলীম মাদ্রাসা: ২টি
- ফাজিল মাদ্রাসা: ১টি
- কলেজ সংখ্যা: ৭টি
- কলেজিয়েট স্কুল: ২টি
শালিখা উপজেলার উল্লেখযোগ্য কলেজ:
- বুনাগাতী ডিগ্রী কলেজ, শালিখা, মাগুরা।
- আড়পাড়া ডিগ্রী কলেজ, শালিখা, মাগুরা।
- বিহারী লাল শিকদার সরকারি ডিগ্রী কলেজ, সিংড়া, শালিখা, মাগুরা।
- সীমাখালী স্কুল এন্ড কলেজ, সীমাখালী, শালিখা, মাগুরা।
- আড়পাড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজ, শালিখা, মাগুরা।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]অর্থনীতি ও বাণিজ্য: কৃষি এ অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। প্রধান ফসল ধান, গম, ভুট্টা, আলু, কলা, সরিষা, সবজি, আঁখ, পাট প্রভৃতি। উৎপাদিত ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে, লিচু, কলা উল্লেখযোগ্য। এখান হতে উৎপাদিত উদ্বৃত্ত ধান, সবজি দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়। নদী ও বিলে উৎপাদিত প্রচুর পরিমাণে মাছ আহরণ এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
নদ-নদী
[সম্পাদনা]শালিখা উপজেলায় তিনটি নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে ফটকি নদী, বেগবতী নদী ও চিত্রা নদী।[৪][৫]
যাতায়াত ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]এ উপজেলার যাতায়াত ব্যবস্থা মোটামুটি ভাল। জেলা শহর মাগুরা, যশোরের সাথে মহাসড়ক পথে এ উপজেলার যোগাযোগ রয়েছে। উপজেলা সদরের সাথে সবকটি ইউনিয়নেরই সব মৌসুমে মোটরযান চলাচলের উপযোগী কাঁচা ও পাকা রাস্তার সংযোগ রয়েছে। উপজেলার মধ্যে ও বাইরে জনজীবনের যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর মধ্যে বাস, ট্রাক, রিক্সা ও ভ্যানগাড়ী। উপজেলা সদর হতে সন্নিকটস্থ স্থানের দুরত্ব:
স্থানের নাম দুরত্ব (কি: মি:
- মাগুরা জেলা শহর ১৪
- কালিগঞ্জ ৩২
- বাঘারপাড়া ২৭
- মহম্মদপুর ৩৯
- যশোর শহর ৩২
- ঝিনাইদহ ৪২
- তালখড়ি ৫
- ধনেশ্বরগাতি (সিংড়া ইউ/পি অফিস) ১২
- শালিখা (শরুশুনা ইউ/পি অফিস) ১৪
- শতখালী (হরিশপুর ইউ/পি অফিস ১৪
- বুনাগাতি ১৪
- গংগারামপুর (পুলুমা ইউ/পি অফিস) ১৮
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
[সম্পাদনা]- শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন
- সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য
- অ্যাড. বীরেন শিকদার এমপি
- কাজী সালিমুল হক এমপি
- গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধরী আব্দুল হালিম
- কমরেড আঃ করিম মোল্যা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে শালিখা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৩০ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারী ২০১৫।
- ↑ "শালিখা উপজেলা"
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-০৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ "শালিখা উপজেলা"
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-০৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৮৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৫৭, ৬১২। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
খুলনা বিভাগের স্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |